থাই সরপুঁটির চাষ

মাহবুব কামাল, কৃষিবিদ

থাই সরপুঁটি মাছ খেতে অত্যন- সুস্বাদু। মাছটি বেশ শক্ত প্রকৃতির অধিক ফলনশীল। প্রতিকূল পরিবেশে কম অক্সিজেনযুক্ত বেশি তাপমাত্রার পানিতেও এ মাছ বেঁচে থাকতে পারে। থাই সরপুঁটি চাষের সুবিধা অনেক। রুইজাতীয় মাছের চেয়ে তুলনামূলক কম খরচে, কম সময়ে ও সহজতর ব্যবস'াপনায় কাঙ্ক্ষিত মাত্রার বেশি উৎপাদন পাওয়া সম্ভব।
মিশ্র চাষ পদ্ধতি অর্থাৎ রুইসহ অন্যান্য উন্নত প্রজাতির মাছের সাথেও অত্যন- সাফল্যজনকভাবে এ মাছ চাষ করা যায়। ছয় মাসে একটি থাই সরপুঁটির পোনা গড়ে ১২০ থেকে ১৫০ গ্রাম ওজনে উন্নীত হয়। একই পুকুরে বছরে দু’বার এ মাছের চাষ করা যায়।
কিভাবে চাষ করবেন
এ মাছ চাষের জন্য পুকুরের আয়তন ৫ থেকে ৩০ শতাংশ হতে পারে। এর চেয়ে বেশি হলে ক্ষতি নেই। তবে ১ একরের ঊর্ধ্বে না হলেই ভালো। পুকুরের গভীরতা হতে হবে ১.৫ মিটার থেকে ২ মিটার অর্থাৎ তিন থেকে চার হাত। পোনা ছাড়ার আগে পুকুর ভালোভাবে তৈরি করে নিতে হবে। শুকনো মৌসুমে পুকুরের সম্পূর্ণ পানি নিষ্কাশন করে তলার মাটি ১০-১৫ দিন রোদে শুকাতে হয়। অতঃপর লাঙল দিয়ে কর্ষণ করে নিতে হবে। পুকুর শুকানো সম্ভব না হলে রাক্ষুসে মাছ ও অন্যান্য ক্ষতিকর প্রাণী মেরে ফেলার ব্যবস'া করতে হবে। এ পর্যায়ে পুকুর তৈরির জন্য প্রতি শতাংশে ১ কেজি হারে পাথুরে চুন প্রয়োগ করা একান- অপরিহার্য। চুন প্রয়োগের সাত দিন পর প্রতি শতাংশে ৪ কেজি গোবর, ১৫০ গ্রাম টিএসপি, ১০০ গ্রাম ইউরিয়া প্রয়োগ করা বাঞ্ছনীয়।
সার পুকুরের তলার মাটির ওপর ছড়িয়ে দিয়ে কোদালের সাহায্যে ভালোভাবে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে। সার প্রয়োগের পর যথাশিগগির পুকুর পানি দিয়ে ভরে দেয়া জরুরি। প্রস-ুত করা পুকুরে মাছের প্রাকৃতিক খাদ্যের পর্যাপ্ত মজুদ সম্পর্কে পুরোপুরি নিশ্চিত হয়ে প্রতি শতাংশে ১.৫ ইঞ্চি থেকে ২ ইঞ্চি সাইজের ৬০-৬৫টি থাই সরপুঁটির পোনা ছাড়া যেতে পারে। পুকুরে যে পরিমাণ মাছ আছে, সে মাছের মোট ওজনের শতকরা চার থেকে ছয় ভাগ হারে চালের কুঁড়া বা গমের ভুসি সম্পূরক খাদ্য হিসেবে প্রতিদিন সকাল-বিকেলে দু’বার পুকুরের সর্বত্র ছিটিয়ে দিতে হবে। প্রতি মাসে একবার জাল টেনে মাছের গড় ওজন নির্ধারণ করে খাবার পরিমাণ ক্রমেই বাড়াতে হবে। পুকুরে মাছের খাদ্য ঘাটতি দেখা দিলে তাৎক্ষণিকভাবে প্রতি শতাংশে ১৫০ থেকে ২০০ গ্রাম ইউরিয়া ও একই পরিমাণ টিএসপি সার প্রয়োগ করা আবশ্যক। থাই সরপুঁটি সাধারণত নরম ঘাস পছন্দ করে। তাই এ মাছের জন্য ক্ষুদিপানা, টোপাপানা, নেপিয়ার ঘাস, কলাপাতা ইত্যাদি প্রতিদিন সামান্য পরিমাণ হলেও সরবরাহ করা গেলে আনুপাতিক উৎপাদনও সনে-াষজনকভাবে বৃদ্ধি পাবে। পাঁচ-ছয় মাস পালনের পর এক-একটি মাছের ওজন দাঁড়াবে গড়ে ১২০ থেকে ১৫০ গ্রাম। এ সময় মাছ বাজারজাত করার পুরোপুরি উপযোগী হয় এবং সর্বনিম্ন ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি হিসেবে বিক্রি করা যায়।
SHARE

Milan Tomic

Hi. I’m Designer of Blog Magic. I’m CEO/Founder of ThemeXpose. I’m Creative Art Director, Web Designer, UI/UX Designer, Interaction Designer, Industrial Designer, Web Developer, Business Enthusiast, StartUp Enthusiast, Speaker, Writer and Photographer. Inspired to make things looks better.

  • Image
  • Image
  • Image
  • Image
  • Image
    Blogger Comment
    Facebook Comment

0 comments:

Post a Comment