টবে শাক-সবজি চাষ

লেখক: কৃষিবিদ বকুল হাসান খান
শাক-সবজি আমাদের শরীরের ভিটামিন ও খনিজ পর্দাথের উত্স। সুতরাং শাক-সবজি যত টাটকা খাওয়া যায় ততই ভাল। স্বাস্থ্য ভাল রাখার জন্য শহরের বাসিন্দারা টাটকা সবজির জন্য মূলত বাজারের উপর নির্ভরশীল। অথচ অল্প পরিশ্রমেই বাড়ির ছাদে, বারান্দায়, কার্ণিশে, বড়-মাঝারি-ছোট বিভিন্ন আকারের টবে পছন্দ মাফিক শাক-সবজির আবাদ করতে পারেন। 

টবে আবাদযোগ্য শাক-সবজি: টমেটো, বেগুন, মরিচ, শশা, ঝিঙ্গা, মিষ্টি কুমড়া, মটরশুটি, কলমি শুটি, কলমি শাক, লাউ, পুঁই শাক, পেঁপে, পুদিনাপাতা, ধনেপাতা, থানকুঁনি, লেটুস, ব্রোকলি ইত্যাদি।  

টবের মাটি: শাক-সবজির বীজতলার জন্য মাটি হতে হবে ঝুরঝুরে, হালকা এবং পানি ধরে রাখার ক্ষমতাসম্পন্ন। মাটি চালনি দিয়ে চেলে জীবাণুমুক্ত করে নিতে হবে। দুই ভাগ বেলে দো-আঁশ মাটির সঙ্গে দুই ভাগ জৈব সার মিলিয়ে নিয়ে বীজতলার মাটি তৈরি করতে হবে। মাটি যদি এঁটেল হয় তাহলে বীজের অঙ্কুরোদগমের সুবিধার জন্য একভাগ বালি মিশিয়ে হালকা করে নিতে হবে। মাটিকে শোধন করে জীবাণুমুক্ত করে নিয়ে চারাকে রোগ-বালাই থেকে রক্ষা করতে হবে। সাধারণত এক লিটার ফরমালডিহাইড শতকরা ৪০ ভাগ ৪০ লিটার পানিতে মিশিয়ে এই দ্রবণের ২৫ লিটার প্রতি ঘন মিটার মাটিতে কয়েক কিস্তিতে ভিজিয়ে দিতে হবে। এরপর দুদিন চটের কাপড় দিয়ে মাটি ঢেকে রেখে পরে চট উঠিয়ে দিলে মাটি জীবাণুমুক্ত হয়ে যাবে।  

বীজ বপন ও সেচ: আগের নিয়মে মাটি হালকা ঝুরঝুরে করে টবের উপরের ভাগ সমতল করতে হবে। খুব হালকাভাবে বীজ ছড়িয়ে দিতে হবে টবের ভেতর। এরপর জৈব সার দিয়ে বীজগুলোকে ঢেকে দিতে হবে। পানি দিতে হবে নিয়মিত ছোট ছোট ছিদ্রযুক্ত ঝাজরি দিয়ে। লক্ষ্য রাখতে হবে, পানির ঝাপটায় যাতে বীজের উপর জৈব সারের আবরণ সরে না যায়। যে সব বীজ আকারে ছোট সেগুলোর ক্ষেত্রে উপর দিয়ে পানি দিলে বীজগুলো পানির ধাক্কায় একস্থানে অঙ্কুরোদগমে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। তাই সব টবের উপর দিয়ে পানি না দিয়ে তলা দিয়ে সেচের ব্যবস্থা করতে হবে।  

পরিচর্যা:অনেক সময় শাক-সবজির চারা, পাখি, পিঁপড়া, মাকড়সা ইত্যাদি নষ্ট করে ফেলে। তার জন্য হেপ্টোক্লোর ৪০ পরিমাণ মত দিয়ে যাবতীয় পিঁপড়া ও মাকড়সার আক্রমণ থেকে ফসল রক্ষা করা যাবে। তবে পাখির হাত থেকে ফসল বাঁচাতে হলে টবের উপর তারের বা নাইলনের জাল দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে। অনেক সময় দেখা যায় টবের মাটিতে বীজ বপনের আগে বিভিন্ন প্রকার আগাছা জন্মাতে পারে। আগাছাগুলো নিড়ানি দিয়ে খুঁচিয়ে তুলে ফেলে দিতে হবে। টবে চারা জন্মালে চারার গোড়ায় যেন আঘাত না লাগে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে, শাক-সবজির টবগুলোতে অবশ্যই আলো-বাতাস পায় এমন জায়গায় রাখতে হবে। তবে অতিরিক্ত ঝড়-বৃষ্টি-রোদ-তাপ থেকে রক্ষা করার জন্য সাময়িকভাবে টব নিরাপদ স্থানে সরানো যেতে পারে। 
সবজি সংগ্রহ: সবজি বেশিদিন গাছে না রেখে নরম থাকতেই তুলে খাওয়া ভাল। এতে করে একদিকে যেমন নরম খাওয়া যায় অন্যদিক গাছে আরো বেশি সবজি আসে। সবজি গাছ থেকে ছিঁড়ে সংগ্রহ করা যাবে না। আস্তে করে কেটে সংগ্রহ করতে হবে। তাহলে সবজি গাছের কোনো ক্ষতি হবে না।
SHARE

Milan Tomic

Hi. I’m Designer of Blog Magic. I’m CEO/Founder of ThemeXpose. I’m Creative Art Director, Web Designer, UI/UX Designer, Interaction Designer, Industrial Designer, Web Developer, Business Enthusiast, StartUp Enthusiast, Speaker, Writer and Photographer. Inspired to make things looks better.

  • Image
  • Image
  • Image
  • Image
  • Image
    Blogger Comment
    Facebook Comment

0 comments:

Post a Comment