শিং-মাগুরের চাষ ব্যবস্থাপনা

লেখক: দলিল উদ্দিন আহমদ 
শিং ও মাগুর অত্যন্ত সুস্বাদু ও পুষ্টিকর মাছ হিসেবে বহুল আলোচিত ও সমাদৃত। কিন্তু জলজ পরিবেশের আনুকূল্যের অভাব এবং মানুষসৃষ্ট নানা কারণে এ সব মাছ আজ বিলুপ্তির পথে। মাছগুলোকে রক্ষার্থে বাংলাদেশ মত্স্য গবেষণা ইনস্টিটিউট ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা কার্যক্রম শুরু করে আশাব্যঞ্জক সাফল্য অর্জন করেছে। পাশাপাশি বেসরকারি পর্যায়ে কর্মরত মত্স্য বিশেষজ্ঞরা ইতোমধ্যে আধুনিক প্রযুক্তিতে কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে নিজস্ব হ্যাচারিতে দেশি শিং ও মাগুরের পোনা উত্পাদন করছে। 

 দেশি শিং ও মাগুর মাছ চাষে সুবিধা: ছোট বড় সব ধরনের জলাশয়ে শিং ও মাগুর মাছ চাষ করা যায়। এ সব মাছ বাতাস থেকে সরাসরি অক্সিজেন নেয় বলে চাষে ঝুঁকি কম। অধিক ঘনত্বে চাষ করা যায়। তাপমাত্রা সহ্য করার ক্ষমতা বেশি। বাজারমূল্য ভাল। সুষ্ঠু খাদ্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ৭ থেকে ৮ মাসে শিং ১০০ থেকে ১৫০ গ্রাম এবং মাগুর মাছ ২০০ থেকে ২৫০ গ্রাম ওজনে উন্নীত করা যায়। রোগীর পথ্য তথা পুষ্টিকর খাদ্য হিসেবে এ মাছের ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে।  

চাষ পদ্ধতি
ঝোপজঙ্গল পরিষ্কার: পুকুরের চারপাশের ঝোপজঙ্গল পরিষ্কার করতে হবে। পুকুর পাড়ে বড় কোনো গাছ থাকলে ডালপালা কেটে দিতে হবে যাতে পুকুরে সূর্যের আলো পড়তে পারে।  
রাক্ষুসে মাছ দূরীকরণ: পুরানো পুকুরের পানি সম্পূর্ণ সেচ দিয়ে ফেলে দিতে হবে। অন্যথায় জাল টেনে সমস্ত মাছ ধরতে হবে। প্রয়োজনে নির্ধারিত পরিমাণ রোটেনন পাউডারের ৩ ভাগের ২ ভাগ পানিতে গুলে ১ ভাগ কাই করে ছোট বল আকারে তৈরি করে পুকুরের সব জায়গায় ছিটিয়ে দিতে হবে। রোটেনন প্রয়োগের আধা ঘণ্টা পর জাল টেনে রাক্ষুসে মাছসহ সমস্ত মাছ ধরে ফেলতে হবে।  
চুন প্রয়োগ: রোটেনন প্রয়োগের ৫ থেকে ৭ দিন পর পুকুরে ৩ ফুট থেকে ৪ ফুট পানি থাকা অবস্থায় প্রতি শতাংশে ১ কেজি হারে চুন প্রয়োগ করতে হবে।  
সার প্রয়োগ: চুন প্রয়োগের সপ্তাহ খানিক পর প্রতি শতাংশে ১০০ থেকে ১৫০ গ্রাম ইউরিয়া, ৫০ থেকে ৭৫ গ্রাম টিএসপি ও ৫ থেকে ৭ কেজি গোবর সার অথবা ২ থেকে ৩ কেজি মুরগির বিষ্ঠা পুকুরের সব জায়গায় ছড়িয়ে দিতে হবে।  সার প্রয়োগের ৫ থেকে ৭ দিন পর পানির রঙ সবুজাভ বা হালকা বাদামী হলে পোনা ছাড়া যাবে।  
মজুদ ঘনত্ব: একক চাষে প্রতি শতাংশে দেশি শিং ৪৫০ থেকে ৫০০টি এবং মাগুর ৪০০ থেকে ৪৫০টি পর্যন্ত চাষ করা যায়।  
খাদ্য প্রয়োগ: শিং ও মাগুর মাছের খাদ্যে আমিষের পরিমাণ ৩৫ থেকে ৪০% থাকতে হবে। সম্পূরক খাবার হিসেবে ৪০% চালের কুঁড়া, ৩০% সরিষার খৈল ও ৩০% শুঁটকি মাছের গুঁড়া একসাথে মিশিয়ে মজুদকৃত মাছের মোট ওজনের ৫ থেকে ১০% হারে দৈনিক দিতে হবে।  
বাজারজাতকরণ: মাগুর ও শিং মাছ ১০০ গ্রাম ওজন হলেই বাজারে বিক্রি করা যায়। জাল টেনে ৫০% মাছ ধরার পর বাকি ৫০% পুকুর শুকিয়ে ধরতে হবে। অথবা- তিন/চার ইঞ্চি প্লাস্টিক পাইপ দুই থেকে তিন ফুট লম্বা করে করে কেটে পুকুরে রাখা হয় তবে বেশীরভাগ মাছই এই পাইপে পাওয়া যাবে। পাইপ ওঠানোর সময় পাইপের একপাশ বন্ধ করে দিয়ে বন্ধ পাশ নিচে এবং খোলা পাশ উপরে রাখতে হবে। নীচের পাশ দিয়ে পানি বেরিয়ে যাওয়ার জন্য ছোট ছিদ্র থাকলে ভাল হয়, তাহলে পাইপের ওজন কম হবে। এ মাছ জীবিত অবস্থায় বাজারজাত করতে হবে।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------
পোনা সংগ্রহের ঠিকানা:

রূপালী ফিসারিজ
মালিক: জনাব জাহাংগীর
ঠিকানা: খাগডহর, সদর, ময়মনসিংহ (সয়মনসিংহ সদরে নেমে খাগডহর সিএমবি মোড়ে নামতে হবে, টেম্পুভাড়া ১০ টাকার মত, তারপর রেললাইন যেই দিকে আছে সেদিকে যেয়ে বায়ে রেল লাইন ধরে সোজা পাঁচ মিনিট হাটলেই রূপালী ফিসারিজ)।
ঢাকা থেকে ওখানে পৌছতে মোটামুটি পাঁচ ঘন্টা সময় লাগে।
জাহাংগীর সাহেবের মোবাইল নং- 01713566492 
এটা বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শিং, দেশী মাগুর পোনা উৎপাদন কেন্দ্র এবং সারা বৎসর পোনা পাওয়া যায়। সময় ভেদে পোনার দাম বাড়ে-কমে। পোনা সংগ্রহের আগে অবশ্যই জাহাংগীর সাহেবের সাথে সাথে ফোনে কথা বলে যাবেন।


SHARE

Milan Tomic

Hi. I’m Designer of Blog Magic. I’m CEO/Founder of ThemeXpose. I’m Creative Art Director, Web Designer, UI/UX Designer, Interaction Designer, Industrial Designer, Web Developer, Business Enthusiast, StartUp Enthusiast, Speaker, Writer and Photographer. Inspired to make things looks better.

  • Image
  • Image
  • Image
  • Image
  • Image
    Blogger Comment
    Facebook Comment

0 comments:

Post a Comment