বিস্ময়কর লাভজনক জারবেরা ফুল চাষ


টিস্যু কালচারের মাধ্যমে জারবেরা ফুলচাষ বিস্ময়কর লাভজনক। এক বিঘা জমিতে সারা বছর ধান, পাট, সবজিসহ অন্যান্য ফসলের চাষ করলে ৫০ হাজার টাকার বেশি পাওয়া যায় না। এ থেকে উৎপাদন খরচ বেরিয়ে গেলে কৃষকের হাতে লাভের পরিমাণ খুবই কম থাকে। কিন্তু জারবেরা চাষে সমপরিমাণ জমি থেকে খরচ বাদে পাওয়া যায় প্রায় পৌনে ছয় লাখ টাকা। এ কথা জানান, যশোরের গোল্ডেন সিড ফার্মের পরিচালক হাফিজুর রহমান পিন্টু। যশোর-বেনাপোল সড়কের পাশে সদর উপজেলার মালঞ্চিতে গোল্ডেন সিড ফার্ম ২০১১ সাল থেকে টিস্যু কালচারের মাধ্যমে জারবেরার চাষ করছে।
ফার্মের পরিচালক জানান, তিন শতক জমিতে জারবেরার চাষ করতে খরচ পড়ে প্রায় এক লাখ ৪০ হাজার টাকা। এর মধ্যে প্রতিটি চারার দাম ৩০ টাকা হিসেবে সাড়ে ৫০০ চারার দামই পড়ে ১৬ হাজার ৫০০ টাকা। এ ছাড়া রয়েছে সার, কীটনাশক, জমি তৈরি প্রভৃতির খরচ। প্রতিটি গাছে ৩৫টি করে ফুল ধরে। এ হিসেবে তিন শতকের ৫৫০টি গাছে ১৯ হাজার ২৫০টি ফুল ধরে। ১০ টাকা হিসেবে এই ফুলের দাম এক লাখ ৯২ হাজার ৫০০ টাকা। অর্থাৎ লাভের পরিমাণ ৫২ হাজার টাকা।  হিসাব অনুযায়ী এক বিঘায় খরচ পড়ে ১৫ লাখ ৪০ হাজার টাকা। ফুল বিক্রি হয় ২১ লাখ ১৭ হাজার ৫০০ টাকা। প্রকৃত লাভ পাঁচ লাখ ৭৭ হাজার ৫০০ টাকা।  দেশে সর্বপ্রথম জারবেরা ফুলের চাষ শুরু হয় ফুলের রাজধানী বলে খ্যাত যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালিতে। সেখানকার চাষিরা ভারত থেকে টিস্যু কালচারের চারা এনে চাষ করতেন। আমদানিকৃত ওই চারার প্রতিটির দাম পড়ত ৯০ টাকা করে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক গবেষক মতিউর রহমান রাজশাহীর আকাফুজি ল্যাবে দেশে সাশ্রয়ী মূল্যে টিস্যু কালচারের চারা উৎপাদনে মনোনিবেশ করেন। একই বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর ড. এম মনজুর হোসেনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে তিনি গবেষণায় সফল হন। এই চারার প্রতিটির দাম পড়ছে ৩০ টাকা করে। গবেষক মতিউর রহমান জানান, জারবেরা ফুলের বীজ থেকে চারা হয় না। মূলগাছের সাকার থেকে যে চারা হয় তার ফুলের উৎপাদন কম। মানসম্পন্নও নয়। এ কারণে বংশবৃদ্ধির জন্য টিস্যু কালচার প্রয়োজন। এই পদ্ধতিতে একসাথে অল্প সময়ে জীবাণুমুক্ত অধিক চারা পাওয়া যায়।
এই ফুলটি বহুবর্ষজীবী হওয়ায় একবার চারা রোপণ করলে বহু বছর ফুল পাওয়া যায়। তবে প্রতি বছর নতুন চারা লাগালে উৎপাদন বেশি হয়। হাফিজুর রহমান পিন্টু জানান, ফুল ফোটার পর গাছে ৩০ থেকে ৪৫ দিন পর্যন্ত সতেজ থাকে। আর তোলার পর সতেজ থাকে আট থেকে ১৫ দিন। এই ফুলের চাষ বৃদ্ধির লক্ষ্যে গোল্ডেন সিড ফার্ম ফুলচাষিদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছে। এ জন্য চার কাঠা জমিতে একটি প্রদর্শনী খামার করা হয়েছে। এখান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে গদখালির ফুলচাষিরা টিস্যু কালচারের মাধ্যমে জারবেরার চাষ করে লাভবান হচ্ছেন। জারবেরা চাষে লাভের কথা স্বীকার করে গদখালি ফুলচাষি কল্যাণ সমিতির সভাপতি আবদুর রহিম বলেন, এখানকার চাষিরা এই লাভজনক ফুল চাষের প্রতি ঝুঁকছেন। সমিতিভুক্ত চাষিরা এবার ১৫ একরে জারবেরার চাষ করেছেন।  জারবেরা সূর্যমুখী প্রজাতির। ফুল দেখতে সূর্যমুখীর মতোই। এর নান্দনিক সৌন্দর্য ফুলের জগতে এক আলাদা মাত্রা যোগ করেছে। বাংলাদেশে ৯ রঙের জারবেরার জাত আছে। এর মধ্যে লাল, সাদা, হলুদ, পিংক, মেজেন্ডা ও কমলা উল্লেখযোগ্য। যশোর জেলার মাটির পিএইচ (অম্লত্ব ও ক্ষারত্ব নির্দেশক) ৬ দশমিক ৫ থেকে ৭ দশমিক ৫ হওয়ায় জারবেরা চাষের উপযোগী। জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি ও জুন-জুলাই জারবেরা চাষের উপযুক্ত সময়।  কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক হেমায়েত হোসেন জানান, টিস্যু কালচারের মাধ্যমে জারবেরা চাষ করলে ফুলচাষিরা আর্থিকভাবে লাভবান হবেন।
চাষ প্রণালী
আবহাওয়াঃ
উন্নতমানের ফুল উৎপাদনের জন্যে সাধারণতঃ গ্রীন হাউজে জারবেরার চাষ করা হয়। উজ্জ্বল সূর্যালোক জারবেরা গাছের বৃদ্ধি ও অধিক সময় ধরে ফুল উৎপাদনে সাহায্য করে। গ্রীষ্মকাল ছাড়া অন্যান্য সময় পূর্ণ সূর্যালোক জারবেরা চাষের জন্য উত্তম। গ্রীষ্মকালে উন্নতমানের ফুল উৎপাদনের জন্য ৩০% ছায়া প্রদান ও তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে জারবেরার চাষ করা হয়। প্রয়োজনের অতিরিক্ত ছায়া প্রদান করলে পাতা হালকা সবুজ বর্ণ ধারণ করে এবং ফুলের দন্ড খাট ও শক্ত হয়। সাধারণতঃ শীতকালে গাছে খুব তাড়াতাড়ি ফুল আসে। অন্যদিকে গ্রীষ্মকালে গাছে ফুলধারণ বিলম্বিত হয়।
রাত্রিকালীন তাপমাত্রা জারবেরা চাষে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে। সাধারণতঃ রাত্রিকালীন তাপমাত্রা ১৮ডিগ্রী- ২০ডিগ্রী সেঃ এর মধ্যে থাকলে রোপনকৃত চারা গাছ ১ মাসের মধ্যে শিকড় গজিয়ে উৎপান ধাপে পৌছায়। পরবর্তীতে তাপমাত্রা নামিয়ে ১৫ ডিগ্রি – ১৮ ডিগ্রি সেঃ এর মধ্যে আনা যেতে পারে। তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রি সেঃ এর উপর উঠতে দেয়া উচিৎ নয়। গ্রীন হাউজে উৎপাদনের ক্ষেত্রে আর্দ্রতা বেশী থাকলে বট্রাইটিস (Botrytis) রোগের প্রাদুর্ভব দেখা দিতে পারে। এ জন্য গ্রীন হাউজে জারবেরা উৎপাদনের ক্ষেত্রে দিনে ৭০% এবং রাত্রে ৮৫% আর্দ্রতা রাখা উচিত। গ্রীণ হাউসে বাতাস পরিসঞ্চালন এবং ভেন্টিলেশন থাকা আবশ্যক।

মাটিঃ
দ্রুত পানি নিষ্কাশনযোগ্য হালকা দো- আঁশ অথবা বেলে দো- আঁশ মাটি জারবেরা চাষের জন্য উত্তম। বেলে দো- আঁশ মাটিতে বাতাস চলাচল সুবিধাজনক এবং দীর্ঘ সময় জৈব পদার্থ অক্ষত থাকে। সাধারণতঃ জমিতে জৈব সার ও মাটির অনুপাত ৭০ : ৩০ হওয়া ভাল। মাটির পি.এইচ. ৫.৫- ৬.০ জারবেরা চাষের জন্য উপযোগী করে নিতে হবে।

বংশ বৃদ্ধিঃ
যৌন ও অযৌন উপায়ে জারবেরার বংশ বৃদ্ধি করা যায়। বীজ থেকে চারা উৎপা নে সময় বেশী লাগে। সাধারণতঃ সংকরায়নের মাধ্যমে নতুন জাত উদ্ভাবনের জন্য বীজ থেকে চারা উৎপাদন করা হয়। অযৌন পদ্ধতিতে ১টি বা ২টি চারা মূল গাছের গুচ্ছ থেকে বিভাজনের মাধদ্যমে রোপণ করে জারবেরার বংশ বিস্তার করা হয়। এ ছাড়া কাটিংয়ের মাধ্যমে চারা উৎপাদন করা যায়। এ জন্য বয়স্ক গাছে পানি সরবরাহ বন্ধ করে দেয়া হয় এবং সাথে সাথে পাতা ছেটে দেয়া হয়।ফলে কয়েকদিনের মধ্যে গাছে প্রচুর কুঁড়ির সৃষ্টি হয়। পরে কুঁড়িগুলি সাবধানে কেটে নিয়ে শিকড় উৎপাদনের জন্য লাগানো হয়। ৮-১২ সপ্তাহের মধ্যে এগুলি লাগানোর উপযুক্ত হয়। বর্তমানে বানিজ্যিক ভিত্তিতে জারবেরা চাষের জন্য টিস্যু কালচারের মাধ্যমে উৎপাদিত চারা ব্যবহার করা হয়।টিস্যু কালচারের মাধ্যমে উৎপাদিত চারা পোকা- মাকড় ও রোগ- বালাই মুক্ত এবং বয়স, আকার আকৃতিতে সমান তাকে বিধায় উন্নতমানের ফুল পাওয়া যায়।

সার প্রয়োগঃ
চারা লাগানোর কমপক্ষে এক সপ্তাহ আগে বেডের প্রতি ১০ বর্গ মিটারের জন্য ৬০ কেজি পঁচা জৈব সার, ১.১৫ কেজি ইউরিয়া অথবা ১ কেজি ক্যালসিয়াম এমোনিয়াম নাইট্রেট অথবা এমোনিয়াম সালফেট, ২.৫ কেজি ট্রিপর সুপার ফসফেট, ৫০০ গ্রাম মিউরেট অব পটাশ ও ৫০০ গ্রাম ম্যাগনেশিয়াম সালফেট প্রয়োগ করে ভালভাবে মাটিতে মিশিয়ে দিতে হবে। জারবেরা দ্রুত বর্ধনশীল উদ্ভিদ। সাধারণতঃ চারা লাগানোর ১০-১২ সপ্তাহের মধ্যে গাছে ফুল উৎপাদন শুরু হয়। এ জন্য জারবেরার জমিতে সুষম সার প্রয়োগ করতে হবে। প্রথম অবস্থায় চারার পাতায় ১% ইউরিয়া সারের দ্রবন স্প্রে করতে হবে। অতিরিক্ত নাইট্রোজেন প্রয়োগে গাছের পাতা বড় হয় এবং ফুলের সংখ্যা কমে যায়। মাটি অতিরিক্ত অম্লক্ষারীয় অথবা ক্ষারীয় হলে মাটিতে গৌণ উপাদানের বিশেষ করে লৌহ, ক্যালশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়ামের ঘাটতি দেখা যায়। সে ক্ষেত্রে মাটিতে চুন অথবা অম্লক্ষারীয় সার যেমন অ্যামোনিয়াম সালফেট প্রয়োগ করে এ সমস্যার সমাধান করা যায়।

চারা লাগানোঃ
কাট ফ্লাওয়ার উৎপাদনের জন্য জমিতে অথবা টবে জারবেরার চাষ করা যায়। জমিতে ৩০-৪৫ সে.মি উচু এবং ১-১.২ মি. চওড়া বেড তৈরি করতে হবে। আন্তঃ পরিচর্যা এবং অন্যান্য কাজের সুবিধার জন্য দুই বেডের মাঝ ৫০ সে.মি জায়গা খালি রাখতে হবে। বেডের মাটি কালো পলিথিন দিয়ে ১-২ সপ্তাহ ঢেকে রেখে শোধন করে নেয়া ভাল। বেডে চারা সারিতে লাগানো হয়। তাই জাত ভেদে সারি থেকে সারির দূরত্ব ২০-৩০ সে: মি: এবং সারিতে চারা থেকে চারার দূরত্ব ২০-৩০ সে: মি: দেয়া হয়। দিনের ঠান্ডা ভাগে অর্থাৎ সকালে অথবা বিকেলে বেডে চারা লাগানো উচিৎ। চারা লাগানোর সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন কোন ক্রমেই চারার ক্রাউন বা মাথা মাটিতে ঢাকা না পড়ে। সেচ প্রয়োগ, পানি নিষ্কাশন, নিড়ানি এবং মালচিং এর সময়ও খেয়াল রাখতে হবে যেন কোনক্রমেই চারার ক্রাউন বা মাথা মাটিতে ঢাকা না পড়ে। চারা লাগানোর পর পরই ঝাঝরি দিয়ে হালকা সেচ দিতে হবে। প্রয়োজনে চারা লাগানোর পর ছায়ার ব্যবস্থা করতে হবে। তবে বর্তমানে বাণিজ্যিক চাষাবাদের জন্য টিস্যু কালচারের মাধ্যমে উৎপাদিত চারা বেশী ব্যবহার করা হয়। কারণ টিস্যু কালচারে উৎপাদিত চারার বয়স, আকার, আকৃতি সমান থাকে।

পানি সেচঃ
জারবেরা গভীরমূলী উদ্ভিদ বিধায় প্লাবন সেচ পছন্দ করে। প্রতিবার সেচের পর মাটি অবশ্যই মালচিং করতে হবে। এর ফলে মাটি বাহিত রোগের আক্রমন কম হবে এবং গাছে ফুলের পরিমান বেশী হবে। পানির অভাবে গাছ ঢলে পড়লে পরবর্তীতে ফুলের দন্ড চোট হয় এবং ফুলের মান কমে যায়। পানি সেচের সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন অতিরিক্ত পানি বেডে জমে না থাকে। সেচের পানি বেডে জমে থাকলে মাটি বাহিত রোগের আক্রমনে গাছ পঁচে যায় এবং মারাত্মক ক্ষতি সাধিত হয়। সাধারণতঃ শুষ্ক মৌসুমে সেচের পরিমান বেশী এবং বর্ষা মৌসুমে সেচের পরিমান কম লাগে।

ফুল উত্তোলনঃ
ফুল পূর্ণ প্রস্ফুটিত ও ডিস্কে দ্বিতীয় স্তরের ফুলে পরাগরেনু দেখ দিলে সংগ্রহের উপযুক্ত হয়। ফুর দন্ডের গোড়া ধরে আস্তে করে ঘুরিয়ে গাছ থেকে ফুল সংগ্রহ করা হয়। চাকু দিয়ে জারবেরার ফুল কেটে সংগ্রহ না করাই ভাল। ফুল সংগ্রহের সময় ফুল দন্ড যতদূর সম্ভব লম্বা থাকা ভাল। সংগ্রহের সাথে সাথে ফুল দন্ডের গোড়া পানিতে ডুবিয়ে রাখতে হবে।
ফলনঃ
সাধারণতঃ জাত ও চাষাবাভেদে ফলন কম বেশী হয়ে হয়। গ্রীনহাউজে প্রতি বর্গ মিটারে গড়ে ২৫০ টি এবং হেক্টরে ২৫,০০,০০০টি ফল উৎপাদন করা যায়। মাঠে চাষাবাদের ক্ষেত্রে উৎপাদন প্রায় অর্ধেক কমে যেতে পারে এবং ফুলের মানও হ্রাস পায়।
পোকা- মাকড়ঃ
১। 

সাদা মাছি ( Transparent fly )
গরম ও শুকনা মেওসুমে সাদা মাছি গাছের পাতা ও ফুলের রস চুষে মারাত্মক ক্ষতি করে। মেটাসিসটক্স (০.১%) অথবা ইন্ডোসালফান (০.১%) ব্যবহার করে মাছ পোকা দমন করা যায়।
২। 

পাতা সুড়ংকারী পোকা ( Leaf minor )
এ পোকার কীড়া পাতায় সুড়ং করে সবুজ অংশ খেয়ে ফেলে। আক্রান্ত পাতা কুকড়ে যায় এবং সূর্যের আলোর বিপরীতে ধরলে জারের মত অসংখ্য সুড়ং দেখা যায়। আক্রান্ত পাতা সংগ্রহ করে ধ্বংস করে ফেলতে হবে ফসলে পোকার আক্রমনের লক্ষন দেখা দিলে রগর (০.১%) অথবা পারমেথ্রিন (০.১%) সেপ্র করতে হবে।
৩। 

জাব পোকা ( Aphid )
জাব পোকা জারবেরার কচি পাতা ও ফুলের কুঁড়ির রস চুষে খায়। জাবপোকার আক্রমনে পাতা কুকড়ে যায় এবং ছত্রাক আক্রমণ করে। মেটাসিসটক্স (০.১%) অথবা মেরিক ( Merrick) (০.২%) হারে প্রয়োগ করে এ পোকা দমন করা যায়।
৪। 

মাকড় বা মাইট ( Mite )
উষ্ণ ও শুষ্ক আবহাওয়াই জারবেরায় মাকড়ের আক্রমণ বেশ হয়। মাকড়ের আক্রমণে কচি পাতার আকৃতি নষ্ট হয় এবং শেষে পাতা শুকিয়ে যায়। নুভক্রন (০.২%) অথবা ক্যালথেন (০.১%) সেপ্রর মাধ্যমে মাকড় দমন করা যায়।
৫। 

থ্রিপস ( Thrips )
অতি ক্ষুদ্র এ পোকা ফুলের কচি অংশ খেয়ে ফুল বিবর্ণ করে ফেলে। আক্রমণ তীব্র হলে অনেক সময় ফুলের কুঁড়ি ফোটে না অথবা ফোটলেও তা অস্বাভাবিক আকৃতির হয়। ম্যালাথিয়ন (০.১%) অথবা ডায়াজিনন (০.১%) নিয়মিত সেপ্র করে এ পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।

রোগ বালাইঃ
জারবেরা চাষে রোগ- বালাই মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে। সেজন্য চারা লাগানোর পূর্বে তৈরীকৃত বেড রাসায়নিক ব্যবহার করে অথবা কালো পলিথিন দ্বারা এক সপ্তাহ ঢেকে রেখে মাটি শোধন করে নিলে মাটি বাহিত রোগ বালাইয়ের প্রকোপ কম হয়। জারবেরার কয়েটি গুরুত্বপূর্ণ রোগের নাম, লক্ষণ ও প্রতিকার ব্যবস্থা দেয়া হলো।
১। 

ক্রাউন রট ( Crown rot )
মাটি বাহিত ছত্রাক ফাইটোপথোরা ক্রিপটোজেনা ( Phytopthora cryptogena) এ রোগের জন্য দায়ী। গাছের পাতা কালো বর্ণ ধারণ করে এবং আস্তে আস্তে ঢলে পড়ে। এ রোগ প্রতিরোধর উপায় হলো-
ক) রোগ প্রতিরোধী জাত ব্যবহার করা,
খ) বেডে প্রয়োজনের অতিরিক্ত সেচের পানি না দেয়া
গ) গাছের মুকুট বা পাতা যেন মাটির সংস্পর্শে না আসে সেদিকে খেয়াল রাখা
ঘ) সেচের পর বেডের মাটি মালচিং করে দেয়া এবং
ঙ) আক্রান্ত গাছের গোড়ার মাটি সরিয়ে ০.২% বিনোমিল ( Benomyl) অথবা রিডোমিল- এম, জেড ( Ridomil – M. Z) প্রযোগ করে এ রোগ দমন করা যায়।
২। 

গোড়া পঁচা রোগ ( Root rot)
এ রোগও মাটি বাহিত। পিথিয়াম ইরেগুলারিয়া ( Pythium irregularea) নামক ছত্রাক এ রোগের জন্য দায়ী। ক্রাউন রট রোগের জন্য সুপারিশকৃত প্রতিরোধ ব্যবস্থা এ রোগের জন্যেও প্রযোজ্য। এ ছাড়াও কপার অক্সি – ক্লোরাইড ( ০.৪%) অথবা ডায়থেন এম -৪৫ ( ০.২%) সেপ্র করে এ রোগ দমন করা যায়।
৩। 

স্পটেড উইল্ট ভাইরাস ( Spotted Wilt Virus)
এ ভাইরাসের আক্রমণে পাতায় হলুদাভ বাদামী রং ধারণ করে। এ রোগ দমনে ফুরাডান প্রয়োগ করতে হবে। এছাড়া আক্রান্ত গাছ তুলে ধ্বংস করে ফেলতে হবে। এ ছাড়া জাররেরা পাউডারি মিলডিউ, অলটারনারিয়া লীফ স্পট, সারকোসপোরা লীফ স্পট এবং বট্রাইটিস রট রোগে আক্রান্ত হতে পারে। যে কোন সিস্টেমিক ছত্রাকনাশক যেমন ব্যাভিষ্টিন, রিডোমিল অথবা বিনোমিল ০.১% হারে গাছে স্প্রে করে উপরোক্ত রোগ সমূহ দমন করা যায়।
SHARE

Milan Tomic

Hi. I’m Designer of Blog Magic. I’m CEO/Founder of ThemeXpose. I’m Creative Art Director, Web Designer, UI/UX Designer, Interaction Designer, Industrial Designer, Web Developer, Business Enthusiast, StartUp Enthusiast, Speaker, Writer and Photographer. Inspired to make things looks better.

  • Image
  • Image
  • Image
  • Image
  • Image
    Blogger Comment
    Facebook Comment

0 comments:

Post a Comment