পোল্ট্রিতে এন্টিবায়োটিক গ্রোথ প্রোমোটার, না কি ন্যাচারাল গ্রোথ প্রোমোটার ব্যবহার করবেন?



পোল্ট্রিতে এন্টিবায়োটিক গ্রোথ প্রোমোটার, না কি ন্যাচারাল গ্রোথ প্রোমোটার ব্যবহার করবেন? লেখক: ডাঃ তায়ফুর রহমান (এডমিন) 
পোল্ট্রী ঔষধ সামগ্রী 4 জন প্রিয়তে নিয়েছেন পোল্ট্রিতে এন্টিবায়োটিক গ্রোথ প্রোমোটার, না কি ন্যাচারাল গ্রোথ প্রোমোটার ব্যবহার করবেনপোল্ট্রিতে অনেক খামারি ভাই গ্রোথ প্রোমোটার ব্যাবহার করে থাকেন  পোল্ট্রির দৈহিক বৃদ্ধির জন্য, অনেকে ব্যবহার করেন সুস্থ থাকার জন্য। আর এই গ্রোথ প্রোমোটার হিসেবে তারা কেউ এন্টিবায়োটিক গ্রোথ প্রোমোটার, কেউ ন্যাচারাল গ্রোথ প্রোমোটার ব্যবহার করেন। আজ আমি আপনাদের সাথে এই দুই প্রকারের গ্রোথ প্রোমোটারের তুলনামূলক চিত্র শেয়ার করতে চাই।  

প্রথমেই এন্টিবায়োটিক গ্রোথ প্রোমোটার নিয়ে আলোচনা করছি।  যেহেতু শব্দটি এন্টিবায়োটিক গ্রোথ প্রোমোটারতাই শুরুতেই এন্টিবায়োটিক কি তা নিয়ে সাধারণ একটু কথা বলি-  
এন্টিবায়োটিকঃ  এন্টিবায়োটিক হচ্ছে সেই সমস্ত substance যা ব্যকটেরিয়ার বৃদ্ধিকে থামিয়ে দেয় বা তাকে মেরে ফেলে। প্রকৃতিগত ভাবেই শত শত এন্টিবায়োটিক রয়েছে কিন্তু এর মধ্যে মাত্র কয়েকটিকে আমরা পোল্ট্রির চিকিৎসা ক্ষেত্রে ব্যবহার করে থাকি। এই এন্টিবায়োটিকগুলো পোল্ট্রির বৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্থ করে তখনই যখন আমরা তা recommended level অনুযায়ী ব্যবহার করে থাকি এবং এই ডোজে জীবাণূ resistant নয়। ভাইরাস জনিত রোগের চিকিৎসায় এন্টিবায়োটিক ব্যবহারের প্রচলন নেই তবে অনেক সময় তা secondary bacterial infection যেমন Escherichia coli. প্রতিরোধ করতে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।  
এখন এন্টিবায়োটিক গ্রোথ প্রোমোটার কি? নাম থেকেই বোঝা যাচ্ছে এরা হলো এন্টিবায়োটিক যা কম মাত্রায় ক্রমাগতভাবে খাদ্যের সাথে মেশানো হয় প্রাণির স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য এবং খাদ্য রুপান্তর হার বৃদ্ধির জন্য। যে মাত্রায় ঐ এন্টিবায়োটিকটি ব্যবহার করা হবে তা কখনই কোন একটি রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ডোজে বা মাত্রায় হবে না। আর তাই সেটি কোন মাত্রায় গ্রোথ প্রোমোটার হিসেবে খাদ্যের সাথে ব্যবহার করা হবে তা অবশ্যই ঐ এন্টিবায়োটিক  প্রস্তুতকারক কোম্পানিকেই নির্ধারণ করে দিতে হবে। যদিও এই মাত্রায় দীর্ঘদিন এন্টিবায়োটিক ব্যবহারের ফলে তাতে ঐ এন্টিবায়োটিকের বিরুদ্ধে জীবাণূ resistant হয়ে পড়ার ঝুঁকি থাকে বিধায় বিশ্বের অনেক দেশেই এন্টিবায়োটিককে গ্রোথ প্রোমোটার হিসেবে ব্যবহার করা হয় না। এন্টিবায়োটিক গ্রোথ প্রোমোটার কিভাবে কাজ করে?  Bacterial population কে নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে এন্টিবায়োটিক গ্রোথ প্রোমোটার কাজ করে থাকে। Gram’s staining এর উপর ভিত্তি করে ব্যকটেরিয়াগুলো ২ প্রকার- Gram-positive এবং Gram-negativeবেশির ভাগ এন্টিবায়োটিক গ্রোথ প্রোমোটারগুলো Gram-positive ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে কাজ করে যেগুলো প্রাণির দূর্বল স্বাস্থ্যের জন্য দায়ী।  সাম্প্রতিক গবেষণায় জানা গেছে যে, জীবাণুমুক্ত পাখিতে  এই এন্টিবায়োটিক গ্রোথ প্রোমোটারগুলোর কোন লাভজনক কার্যক্রম দেখাতে পারে না। তাই এটা বলা যায় যে, antimicrobial (antibacterial) activity’র জন্যই কেবল এই এন্টিবায়োটিক গ্রোথ প্রোমোটারগুলোর প্রভাব রয়েছে, bird‘physiological interaction জন্য নয়।  এন্টিবায়োটিক গ্রোথ প্রোমোটারের সুবিধা-অসুবিধাঃ  যখন পাখির অন্ত্রে জীবাণু থাকবে তখন এই এন্টিবায়োটিক গ্রোথ প্রোমোটারগুলো ভালো কাজ করে, কিন্তু যখন তা থাকে না তখন আর তার কোন কাজ নেই, তবে কেউ কেউ মনে করে থাকেন এমতাবস্থায় এগুলো দেহের উপকারী ব্যকটেরিয়ার উপর কাজ করে এগুলোকে ধ্বংস করার চেষ্টা করে যা পাখিকে অধিক ধকলে ফেলে দেয়। এছাড়া এগুলো ডিম ও মাংসের সাথে পরিবাহিত হয়ে মানুষের জন্য হুমকি হয়ে দাড়ায় (মানুষের দেহে resistant হয়ে )।  Health Canada কর্তৃক অনুমোদিত এন্টিবায়োটিক গ্রোথ প্রোমোটারগুলোঃ  chlortetracycline virginiamycin bacitracin bambermycins lincomycin salinomycin penicillin monensin tylosin lasalocid ন্যাচারাল গ্রোথ প্রোমোটারঃ  ন্যাচারাল গ্রোথ প্রোমোটার  যা নন-এন্টিবায়োটিক গ্রোথ প্রোমোটার হিসেবেও পরিচিত। নিচে উইকিপিডিয়া থেকে সংজ্ঞা হুবহু তুলে ধরছি-  “Different categories of feed additives for farm animals are referred to as natural growth promoters (NGPs) or non-antibiotic growth promoters. They are commonly regarded as favorable alternatives to antibiotic growth promoters (AGPs) in livestock production.”  ন্যাচারাল গ্রোথ প্রোমোটারের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো এগুলোর প্রায় সবগুলোই পরোক্ষভাবে ব্যাকটেরিয়াকে প্রতিরোধ করে থাকে, ফলে এন্টিবায়োটিক রেজিষ্ট্যাণ্ট হওয়ার ভয় থাকে না। 
নিচে কিছু উদাহরণের মাধ্যমে বিষয়গুলো তুলে ধরার চেষ্টা করছিঃ  

  1. এসিডিফায়ারঃ এসিডিফায়ারের কাজ হলো এগুলো পানিতে বা খাবারে এসিডিক পরিবেশ তৈরি করে, যাতে বেশির ভাগ ক্ষতিকারক ব্যকটেরিয়াই হয় সরাসরি মারা যায় নতুবা বৃদ্ধি বাধা-প্রাপ্ত হয় নতুবা বংশবৃদ্ধি বাধা-প্রাপ্ত হয়। আর উপকারি ব্যাকটেরিয়াগুলো যেহেতু অনেক কম পিএইচেও বাঁচতে পারে ফলে দেহে উপকারি ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বৃদ্ধি পায় এবং এরা হজম প্রক্রিয়ায় সহায়তা করা সহ রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলে, ফলে পাখিরি সার্বিক স্বাস্থের উন্নতি ঘটে।  
  2. প্রোবায়োটিকঃ প্রোবায়োটিকসমূহ অন্ত্রে ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়ার সঙ্গে প্রতিযোগীতায় লিপ্ত হয়। এরা অন্ত্রের receptor গুলোকে ব্লক করে দিয়ে অথবা antimicrobial substances উৎপন্ন করে অথবা immune system-কে সক্রিয় করে ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়াকে প্রতিরোধ করে।  
  3. প্রিবায়োটিকঃ এগুলোএকধরনের শর্করা যা host animal কর্তৃক অপাচ্য কিন্তু অন্ত্রের উপকারী ব্যাকটেরিয়াগুলো এগুলোকে ভাঙতে পারে এবং ব্যহার করতে পারে। ফলে অন্ত্রে এদের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়।  
  4. সিনবায়োটিক (Synbiotics)ঃ এরা হলো প্রোবায়োটিক আর প্রিবায়োটিকের মিশ্রণ, যা একসাথে synergistic ক্রিয়া প্রদর্শণ করে।  
  5. ফাইটোজেনিকস (Phytogenics)ঃ এরা herbs, spices or aromatic plants থেকে উৎপাদিত হয়ে থাকে এবং এগুলোর antimicrobial, antifungal, antiviral, antioxidant অথবা sedative properties রয়েছে। এদের appetizing effect রয়েছে ফলে খাবারের রুচি বৃদ্ধি পায় এবং endogenous digestive enzyme-কে উদ্দিপিত করে। 


এছাড়াও এদের gut microflor ‘র উপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রয়েছে। যেমনঃ Sangrovit WS, Oregosteam Liquid ইত্যাদি (শুধু এই দুটি প্রোডাক্টের উপরই দুটি আর্টিকেল হতে পারে, আমি ব্যাক্তিগতভাবে এই দুটি গ্রোথ প্রোমোটার ব্যাবহার করে দারুন ফলাফল পেয়েছি)।  এছাড়াও Feed enzymes Immune stimulants গুলিও ন্যাচারাল গ্রোথ প্রোমোটারের কাজ করে থাকে।  সবশেষে এই উপসংহারে আসা যায় যে, যেহেতু ন্যাচারাল গ্রোথ প্রোমোটারগুলো প্রাকৃতিক উপায়ে প্রাণি-দেহের ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, ফাংগাস ও টক্সিন প্রতিরোধ করে এবং প্রাণির স্বাভাবিক ক্রিয়াকলাপকে উদ্দিপিত করে এবং এন্টিবায়োটিক গ্রোথ প্রোমোটারের পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া প্রদর্শণ থেকে মুক্ত তাই আমাদেরকেও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সুস্বাস্থ্যের জন্য আমাদের পোল্ট্রিকে এন্টিবায়োটিক গ্রোথ প্রোমোটারের পরিবর্তে ন্যাচারাল গ্রোথ প্রোমোটার বা নন-এন্টিবায়োটিক গ্রোথ প্রোমোটার ব্যবহার করা উচিৎ এবং বাংলাদেশ সরকারের উচিৎ উন্নত বিশ্বের ন্যায় আমাদের দেশেও এমন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা যাতে এন্টিবায়োটিককে শুধু চিকিৎসার উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা যাবে, গ্রোথ প্রোমোটার হিসেবে নয়
SHARE

Milan Tomic

Hi. I’m Designer of Blog Magic. I’m CEO/Founder of ThemeXpose. I’m Creative Art Director, Web Designer, UI/UX Designer, Interaction Designer, Industrial Designer, Web Developer, Business Enthusiast, StartUp Enthusiast, Speaker, Writer and Photographer. Inspired to make things looks better.

  • Image
  • Image
  • Image
  • Image
  • Image
    Blogger Comment
    Facebook Comment

0 comments:

Post a Comment