মাছ চাষে খাদ্যের এফসিআর (FCR) কেন জরুরী

বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে বাণিজ্যেক ভাবে মাছ চাষ এক গুরুত্বপৃর্ণ ব্যবসা হিসাবে পরিচিতি লাভ করেছে, যা অতি সহজেই অনুমান করা যায়। মাছ চাষ শিল্পকে ঘিরে ইতিমধ্যে দেশী বিদেশী অনেক ছোট বড় মাছের খাবার উৎপাদন কারী প্রতিষ্ঠান বা ফিড মিল, মাছের পোনা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান হ্যাচারী, মাছ বা বা হিমায়িত চিংড়ি প্রক্রিয়াজাতকারী প্রতিষ্ঠান বা প্রসেসিং প্লান্ট এর পাশাপাশি অনেক বড় প্রতিষ্ঠাণ মাছ চাষে ব্যবক হারে বিনিয়োগ করছে এ সবই মাছ চাষ উন্নয়নে ইতিবাচক দিক। পাশাপাশি বেকারত্বদূরীকরন সহ কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে যা আমাদের দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন বিরাট ভূমিকা পালন করছে। আধুনিক উপায়ে মাছ চাষ এক ব্যবপকভিত্তিক বিজ্ঞান, বিশেষ করে মাছ চাষে মোট খরচের ৬০-৮০% খরচ ব্যয় করতে হয় খাদ্যের জন্য সেহেতু মাছ চাষের ভাল ফলাফল নির্ভর করে খাদ্যের গুনাগুন এবং খাদ্যের প্রয়োগ ব্যবস্থাপনার উপর। খাদ্য ব্যবস্থাপনার গুরুত্বপূর্ন দিক হল খাদ্যের এফসিআর সম্পর্কে সার্বিক জ্ঞান থাকা। মাছ চাষ পুকুর পাশাপাশি খাদ্য বাজারজাত কারী প্রতিষ্ঠাণ গুলোর সফলতার মূল মাপ কাঠি খাদ্যের সঠিক এফসিআর মানের উপর । একদিকে মাছের খাদ্যের উপকরনের মূল্য বৃদ্ধি অন্য দিকে খাদ্যের কোয়ালিটি ও এফসিআর মাণ সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান না থাকার কারনে অনেক ক্ষেত্রেই মাছ চাষীরা ক্ষতির সম্মূখীন হয়। 


খাদ্যের এফসিআর কি?
এফসিআর (FCR) হল খাদ্য রূপান্তরের হার, অর্থাৎ এক কেজি মাছ উৎপাদন করতে কত কেজি খাদ্যের প্রয়োজন হয় তার অনুপাতকেই খাদেএফসিআর মান বলা হয়। উদাহর সরূপ বলা যায় এক কেজি তেলপিয়া মাছ উৎপদন করতে যদি ১.৫ কেজি খাদ্যের প্রয়োজন হয় তাহলে উক্ত তেলাপিয়া মাছ উৎপাদনের ক্ষেত্রে মাছের এফসিআর হবে ১:১.৫, অথবা ১ কেজি শিং মাছ উৎপাদনের জন্য যদি ২.৫ কেজি খাদ্যের প্রয়োজন হয় সেক্ষেত্রে শিং মাছের এফসিআর হবে ১:২.৫। 

খাদ্যের এফসিআর মান জানলে এক কেজি মাছের উৎপাদন খরচ কত তা অতি সহজেই অনুমান করা যায়, সুতরাং মাছ চাষের ক্ষেত্রে এফসিআর মান জানা বাধ্যতামূলক।

মাছের উৎপাদন সর্ম্পকিত কিছু সূত্র সমূহ:
নিন্ম লিখিত সূত্র সমূহ আধুনিক মাছ উৎাদনের জন্য জানা জরুরী
ক. খাদ্য রূপান্তরের হার (এফসিআর)= মোট ব্যবহৃত খাদ্য (কেজি)/মোট উৎপাদিত মাছ (কেজি)-মাছের মোট প্রাথমিক ওজন (কেজি)


খ. মাছের গড় ওৎন বৃদ্ধি= বর্তমানে মাছের মোট ওজন (গ্রাম)- প্রাথমিক মাছের ওজন (গ্রাম)/ মোট চাষ কাল (দিন)


গ. মাছের গড় ওজন = প্রত্যেক সমূনায় মাছের প্রাপ্ত ওজনের যোগফল/প্রত্যেক নমূনায় মাছের প্রাপ্ত সংখ্যার যোগ ফল *১০০।


মাছের এফসিআর মান জানা কেন জরুরী:
বাণিজ্যিক ভাবে মাছ উৎপাদনের ক্ষেত্রে লাভ কক্ষির দিকটি বিশেষ গুরুত্ব বহন করে । খরচের সার্বিক খাতের মধ্যে হল - খাদ্য ক্রয়, জমীর লীজ মূল্য পোনা কেনার খরচ, লেবার, কনসালটেনসি, মেডিসিন , মাছ বিক্রয় কালীন খরচ , জালানী/বিদ্যৎ খরচ সহ অন্যান্য বিবিধ খরচ। আধুনিক গবেষণায় এবং দেশ বিদেশের বাস্তবতায় দেখা গেছে মাছে উৎপাদনের মোট খরচের ৬০-৮০% খরচ হয় খাদ্যের জন্য। বর্তমানে খাদ্যের ক্রমবর্ধমান উচ্চ মূল্য খাদ্য ক্রয় এবং খাদ্যের সঠিক এফসিআর না জানার কারনে মাছ চাষে ভাল ফলাফল করা অনেক ক্ষেত্রে দূরহ ব্যপার হয়ে দাড়ায় , পাশাপাশি একজন সফল খামরীকে খাদ্যের এফসিআর মান কি কি কারনে কম বেশী হতে পারে সে বিষয়ে অধিক গুরুত্ব দিতে হবে। যদি কোন কারনে খাদ্যের এফসিআর সঠিম ভাবে বজায় রাখতে না পারে অর্থাৎ মাছের বাজার দরের চেয়ে মাছের উৎপাদন মূল্য বেশী হবে মাছ চাষে নিশ্চিত ভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে সেটা অবধারিত। তবে এ কথা সত্য যে বর্তমান আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে মাছ চাষের ক্ষেত্রে কোন মাছ প্রজাতির এফসিআর কি হওয়া দরকার তার কোন সঠিক মান বা মাত্রা সর্বসম্মতি ক্রমে দাড় করানো যায়নি পাশাপাশি এ ব্যপারের বিভিন্ন জন বিভিন্ন মতামত প্রকাশ করে থাকে মোট কথা যে কোন মূল্যেই মাছের খাদ্যের খরচ উৎপাদন খরচের চাইতে অনেক কম হতে হবে।

খাদ্যের এফসিআর মান সঠিক রাখতে নিন্মলিখিত বিষয় গুলো গুরুত্বের সাথে বিবেচনায় রাখতে হবে।
১. খাদ্যের মান
২. পানির ভৌত ও রাসায়ানিক মান
৩. পানির তাপমাত্রা
৪. পুকুরের দ্রবীভূত অক্সিজেনের পরিমান
৫. পুকুরের মাছের প্রকৃত সংখ্যা জানা
৬. খাদ্যের প্রকার এবং ম্যাস সাইজ
৭. পুকুরের গভীরতা,পুকুরের আয়তন ও খাদ্য প্রয়োগ কৌশল

১. খাদ্যের মান 
খাদ্যের মান এফসিআর কে সরাসারি প্রভাবিত করে । আমাদের দেশের অনেক খামারী কম দামের ও নিন্ম মানের খাবার ব্যবহার করে থাকে এতে করে লাভের তুলনায় ক্ষতির পরিমানই বেশী হয়ে থাকে, নিন্ম মানের খাবার ব্যবহারের ফলে খাদ্যের এফসিআর বৃদ্ধি পায় । মাছের খাদ্যের ক্ষেত্র প্রোটিন মানকে প্রধান্য দিয়ে থাকে শুধু প্রেটিন ভাল থাকলেই ভাল ফলাফল পাওয়া যাবে সেটা বাস্তব সম্মত না ও হতে পারে। আমাদের দেশে মাছের খাদ্যের প্রোটিন হিসাবে অনেক ক্ষেত্রে খুবই নিন্ম মানের খাদ্যের অনুপোগী মিটবোন ব্যবহার হয়ে থাকে যা ব্যবহারে মাছের হজম কম হয় পাশাপাশি পানির ভৈাত ও রাসায়নিক উপাদনের পরিবর্তণ হতে থাকে। ফলশ্রুতিতে খাদ্যের অধিক মাত্রায় অপচয়ের ফলে মাছের উৎপাদন ব্যহত হয় এবং খাদ্যের এফসিআর মানের পরিবর্তণ হয়। খাদ্যের প্রোটিন মানের পাশাপাশি কি ধরনের খাদ্য উপাদান ব্যবহার হয়েছে এটাও জানা প্রয়োজন। আমাদের একটা সাধারন ধারনা যে খাদ্য প্রোটিন মান ভাল থাকলেই খাদ্যের মান ভাল হবে , খাদ্যের প্রোটিন মানের সাথে কোন উৎস্য থেকে প্রোটিন নেয়া হয়েছে , খাদ্যর বিপাকিয় শক্তির মান কত, কি কি অ্যামাইনো এডিক কত পরিমান বিদ্যমান ও খাদ্যে অ্যাশের পরিমান কত সব বিষয়ের উপর নির্ভর করে খাদ্যের সঠিক গুনগত মান। একটি ভাল মানের খাদ্য মাছের উৎপান খরচ কমায় এবং খাদ্যের এফসিআর উন্নত করে।

২. পানির ভৈাত ও রাসায়নিক মান:
পানির ভৌত ও রাসায়নিক মানের তারতম্যের ফলে খাদ্যের মানের উপর ব্যবপক প্রভাব ফেলে , সাধারনত পানির তাপমাত্র, পানিতে থাকা বিভিন্ন প্রকার দ্রবীভুত ও অদ্রবীভূত পদার্থ দ্রবীভূত অক্সিজেন, অ্যামোনিয়া,কার্বনডাইঅক্সাইড, নাইট্রেড, নাইট্রাইড, এলকানিটি ইত্যাদি।

৩. পানির তাপমাত্রা
মাছ চাষ পুকুরে পানির তাপমাত্রা সরাসারি মাছের গ্রোথ এফসিআর মানের উপর প্রভাব ফেলে । অনেক ক্ষেত্রে খামারী ভাইয়োর তাপমাত্র ও খাদ্য ব্যবহার সংক্রান্ত সম্যক জ্ঞন না থাকার ফলে খাদ্যের অপচয় সহকারে নানারকম অসুবিধার সম্মুখ্খীন হয় । ২৪-৩২ ডিগ্রি সে: তাপমাত্রায় মাছের বৃদ্ধি ভাল হয় বিষেশ কওে পানির তাপমাত্রা মাছের মেটাবলিজে মর উপর প্রভাব বিস্তার করে , পানির তাপমাত্রা ৩৪ ডিগ্রি সে: বা তারো অধিক হলে পুকুরের ২৫-৫০ খাদ্য কম প্রয়োগ করতে হবে যদি কোন কারনে পানির তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রি সে: বা তার বেশী হয় সেই ক্ষেত্রে সাময়িক ভাবে খাদ্য বন্ধ করে রাখাই উত্তম , প্রয়োজনে দিনের যে সময়টায় তাপমত্রা কম থাক তখনই খাদ্য প্রয়োগ করতে হবে। দিনের বেলায় ২-৪ টার দিকে সূযের আলোর প্রখরতা বেশী থাকে ,পানির তাপমাত্রা বেশী থাকলে পুদুরের সময় খাবার কমিয়ে দেয়া বা খাবার সময়ের পরির্তন করে খাবার প্রয়োগ করতে হবে , তবে নির্দিষ্ট সময়ে খাবার প্রয়োগ করলে মাছের একটা স্বাভাবিত প্রবনতা হয়ে যায় যে ঠিক সেই সময়েই খাবার গ্রহন করাার প্রবনতা বেশী থাকে , এই দিকটা অবশ্যই বিবেচনায় আনতে হবে গনগন খাবারের সিডিউল বা খাদ্য প্রয়োগেয় সময় পরিবর্তন করলে খাবারের এফসিআর মানের তারতম্য ঘটতে পারে এতে করে খাবার অপচয় সহ পানির ভৌত ও রাসাযনিক মানের পরিবর্তন হবার সম্ভাবনা বেশী থাকে।

৪. পুকুরের দ্রবীভূত অক্সিজেন:
ইউরোপে একটা প্রবাদ প্রচলিত আছে পুকুরের অক্সিজেনই টাকা। এটা বৈজ্ঞানিত ভাবেও সত্য। পুকুরের দ্রবীভূত অক্সিজেনের পরিমানের উপর নির্ভর করে মাছের খাদ্য হজম প্রক্রিয়া বা মাছের বৃদ্ধি মাছ চাষ পুকুরে যত ভাল মানের খাবারই ব্যবহার করা হক না কেন যদি অক্সিজেনের অভাবে হজম প্রক্রয়া না হয় তাহলে মাছের সা¦ভবিক বৃদ্ধি বজায় থাকবেনা উপরন্তু পানির মান পরিবর্তন সহ রোগের প্রদুর্ভাব দেখা দিতে পারে।মাছ চাষ পুকুরের মাছের উৎপাদন নির্ভর কওে সফল ভাবে অক্সিজেন ব্যবস্থাপনার উপর । একটি মাছ চাষ পুকুরে যে সকল প্রাণি দ্রবীভূত অক্সিজেন গ্রহন করে থাকে 

ক. পকুরের সকল মাছ প্রজাতি
খ. পুকুরের ব্যকটেরিয়া
গ. মেক্রো ও মাইক্রো বেনথোজ
ঘ. সকল জুপ্লাংটন এবং
ঙ. রাতের বেলায় সকল প্রকার উদ্ভিদ কনা বা ফাইটোপ্লাংটন

পুকুররর দ্রবীভূত অক্সিজেন মাত্রার উপর মাছের স্বশণ বির্ভও করে, যখন অক্সিজেন মাত্রা সম্পৃক্ত সীমায় (ঝধঃঁৎধঃরড়হ ষবাবষ)বা তার চাইতে একটু বেশী থাকে তখনই মাছের স্বাভাবিক গ্রোথ বজায় থাকে, খাবারের এফসিআর মানের উন্নয়ন সতকারে মাছের সার্বিক প্রোডাকশন বৃদ্ধি পাবে।অপ্রিয় হলেও সত্য যে আমাদের প্রেক্ষাপটে সাধারনত পুকুরের খাদ্য প্রয়োগের আগে ও পরে কি পরিমান অক্সিজেন আছে তা দেখা হয়না , সাধারনত পুকুরের খাদ্য প্রয়োগের পর পর খাদ্য হজমের জন্য অক্সিজেনের প্রয়োজন বেড়ে যায়। পুকুরের মাছের স্বাভাবিক বেচে থাকার জন্য নূন্যতম ৫ মিলি/লি. অক্সিজেন প্রয়োজন হয় যার মাত্রা ৫ এর নীচে নামলে মাছ অস্বাভাবিক অচরন করে পাশাপাশি অক্সিজেনের মাত্রা ৩ বা ২ থাকলে মাছ উপরে ভাসতে খাকে, অতিরিক্ত অক্সিজেন সল্পতার জন্য মাছ খাবি খায়। পুকুরের অক্সিজেনের মাত্রা স্বভাবিকের চেয়ে কম থকলে মাছ প্রয়োজনীয় অক্সিজেন গ্রহন করতে বেশী পরিমান শক্তি ব্যয় করতে হয় যার ফলে মাছ দুর্বল হয়ে পরে মাছের স্বাভবিক গ্রোথ ব্যবপকারে ব্যহত হয় যা মাছের এফসিআরকে প্রভাবিত করে। পুকুরের অক্সিজেনের সল্পতা থাকা অবস্থায় পুকুরে খাদ্য প্রয়োগ করলে প্রয়োজনীয় অক্সিজেনের অভাবে মাচ খাদ্য গ্রহন কমিয়ে দেয় যার ফলে খাদ্য পুকুরের তলদেশে জমা হয়ে পুকুরের মাছের বৃদ্ধি ব্যহত সহ এফসিআর পরিবর্তণ করে খাদ্যের অপচয় হয় এবং উৎপদন খরচ বেড়ে যায় । বিভিন্ন পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে ৮-১০ মিলি/গ্রাম মাত্রার অক্সিজেনে মাছের বৃদ্ধি ভাল হয়।সুতরাং ভাল উৎপদান বা সঠিক এফসিআর মান বজায় রাখার জন্য পুকরের প্রতিনিয়ত অক্সিজের মাত্রা নির্নয় করা বা জানা জরুরী । যদি পুকুরের অক্সিজেনের মান ৫ বা তার নীচে নেমে যায় তখন সাময়িক ভাবে পুকুরের খাদ্য প্রয়োগ বন্ধ করে অক্সিজেন বৃদ্ধির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করতে হবে। বাস্তব ক্ষেত্রে দেখা গেছে যে সকল মাছ চাষ পুকুরে তলদেশে জৈব পদার্থ বা কাদার পরিমান বেশী , পুকুরে মাত্রাতিরিক্ত সবুজ উদ্ভিদ কনা বা ফাইটোফাংটন বা ব্লুম বিদ্যমান যে সকল পুকুরের অক্সিজেনের স্বল্পতা দেখা যায় ।

৫.পুকুরে মাছের প্রকৃত সংখ্যা জানা

অনেক ক্ষেত্রে পুকুরের মাছের প্রকুত সংখ্যা জানা থাকে না , বিশেষ কওে পুকুরের মাছের প্রকৃত সংখ্যা না জানা ্এক ধরনের মারাত্বক ভুর সিদ্ধান্ত।পুকুরের মানের প্রকৃত সংখ্যা না জানার কারণে মাছের সঠিক ওজন নির্নয় করা যায়না এতে করে খাদ্য নির্ণয়ের ক্ষেত্রে বিশেষ অসুবিধায় পরতে হয় , পাশাপাশি সঠিক সংখ্যা না জানার কারণে খাদ্যের প্রয়োগ বেশী বা কম হবার সসম্বাভনা থাকে । অনেক ক্ষেত্রে মাছ নার্সিং না করে পুকুরে পোনা মজুদ করে থাকে এতে করে কি পরিমান পোনা পুকুরে টিকে আছে তা জানা যায়না তাছাড়াও আবার দেখা গেছে সার্নারী পুকুরের চারিপাশে নেটের বেড়া না থাকাতে সাপ, ব্যঙ সহকারে ক্ষতিকার প্রাণি পুকুরের প্রবেশ করে ছোট পোনা খেয়ে ফেলে, ফলে মাছের মরটালিটি বৃদ্ধি পায় । নার্সারী পুকুরের সঠিকভাবে পোনা লালন পালন করে সটিক সংখ্যার মান সম্মত পোনা মজুদ পুকুরের মজুদ করতে হবে হবে এতে করে চাষ পুকুরে মাছের সঠিক মান জানা যাবে যার ফলে মাছের প্রকৃত ওজন জানা সাপেক্ষে সঠিক মাত্রায় খাদ্য নির্বাচন করা যাবে এতে করে মাছের খাদ্য অপচয় রোধ হবার সম্ভাবনা থাকবে ও খাদ্যের এফসিআর মান সঠিক থাকবে।

৬. খাদ্যের প্রকার ও ম্যাস সাইজ

খাদ্যর প্রকার ভেদ বা খাদ্যের মেস সাইজ খ্যাদ্যর এফসিআর মান কে প্রভাবিত করে। আমাদের দেশে যে সকল প্রকারে খাদ্য পাওয়া যায় তা হল (ক) প্রী-নর্সাারী, নর্সারী, ক্রাম্বলার, স্টারটার, গ্রোয়ার এবং ফিনিসার। আমদেরে দেশে এবং বিদেশী অনেক খাদ্য উৎপাদনকারী কোম্পানী খাদের নিজস্ব পিলেট মেশিনের উপর নির্ভর করে খাদ্যের মেস সাইজ বা খাদের প্রকার নির্ধারণ করে থাকে। আমাদের দেশে বর্তমানে তেলাপিয়া, কৈ, শিং , পাংগাস মাছের ব্যপক বিত্তিক একক চাষ হয়ে থাকে। পাংগাস মাছের ক্ষেত্রে খাদ্যের ম্যাস সাইস তেমন সমস্য না থাকলেও অন্যান্য মাছের ক্ষেত্রে খাদ্যের ম্যাস সাইজ মাছের বৃদ্ধি ও এফসিআর মানের তারতম্য ঘটায় । বিশেষ করে তেলাপিয়া, কৈ শিং মাছের একক চাষের ক্ষেত্রে মাছরে মুখের সাইেজের অনুপাতিক বেশী ম্যাস সাইজের খাবার প্রয়োগ করলে মাছের বৃদ্ধি ব্রহত হয় , খাদ্যের অপয়চয় হয় এবং খাদ্যের এফসিআর মানের পরিবর্তন হয় যা সরাসরি মাছ উৎপাদনের উপর বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। আমাদের এখন কর্তব্য হল খামারীদের বা মাছের ভাল উৎপাদনের স্বার্থে মাছের ওজন এবং বয়স অনুযায়ি খাদ্যের ম্যাস সাইজ নির্নয় করা যাতে করে খামাীরী ভাইয়েরা খাদ্য নির্বচনের ক্ষেত্রে কোন প্রকার অসুবিধায় সম্মুখীন না হয় সেক্ষেত্রে খাদ্যের ব্যাগের গায়ে ম্যাস সাইজ উল্লেখ করা।

৭. পুকুরের গভীরতা,পুকুরের আয়তন ও খাদ্য প্রয়োগ কৌশল

মাছ চাষ পুকুরের গড় গভীরতা ৫-৭ ফুট থাকলে পুকুরের বেশী পরিমান অক্সিজেন সরবরাহ এবং পানির তাপমাত্রা সঠিক থাকার কারনে খাদ্য দ্রুত হজম হয় পাশাপাশি মাছের দৈহিক বৃদ্ধির হার ভাল হয় । কম গভীর পুকুরে মাছ চাষের ক্ষেত্রে অক্সিজেন সল্পতার কারনে খাদ্যের অপচয় বেশী হয় যা অনেক ক্ষেত্রে এফসিআর খারপ হয় ও খাদ্য বেশী প্রয়োজন হয়। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় পুকুরের আয়তন বেশী (এক একরের বেশী) বড় হলে খাদ্য প্রয়োগে সমস্যা দেখা যায় বিশেষ করে মাছ পুকুরের সকল জায়গায় বিচরণ করে ,খাদ্য প্রয়োগের সময়কাল কম হলে বা দ্রুত খাদ্য ব্যবহারের পরে দূরের মাছ এসে খাবার গ্রহন করতে পারে না , কিছু মাছ বেশী খাবার গ্রহন করে আবার কিছু মাছ কম খাবার গ্রহন করে এতে মাছের সাইজ কম বেশী হয়ে থাকে যার ফলে মোট উৎপাদন ব্যহত হয় দুর্বল এফসিআর হয় সেজন্য পুকরের আয়তন বেশী বড় হলে প্রয়োজনে আস্তে আস্তে বেশী সময় ধরে খাদ্য প্রয়োগ করলে মাছের সাইজ ভেরিয়েশণ কম হবে এবং খাবারের সঠিক ব্যবহারের ফলে খাদ্যের এফসিআর উন্নত হবে। খাবার প্রয়োগের ক্ষেত্রে কিছু সাধারন নিয়ম অনুসরন করা জরুরী যেমন মাছের আকার ও বয়ন অনুযায়ী খাদ্যের পিলেট সাইজ ও খাদ্য নির্বাচন ও পরিবর্তন করতে হবে। ছোট মাছকে বেশী প্রোটিণ যুক্ত ও সহজে হজম যোগ্য খাবার প্রয়োগ করতে হবে পাশাপাশি ছোট মাছ কে বড় মাছের তুলনায় ঘনঘন খাবার দিতে হবে (দৈনিক ৪-৫ বার) বড় মাছের ক্ষেত্রে ৩-৪ বার খাবার প্রয়োগ করলে খাবারের অপচয় রোধ হবে এবং এফসিআর মান উন্নত হবে। মোট কথা মাছ চাষে খাদ্য ব্যবস্থাপনা , খাদ্যো মান, পরিবেশগত সকল বিষয় ,মাছের প্রকৃত সংখ্যা ও খাদ্য প্রয়োগ ব্যবস্থাপনাকে বিবেচনায় রেখে খাদ্য প্রয়োগ করলে মাছ চাষে ক্ষতির চাইতে লাভের পরিমানউ বেশী হবে এটাই বাস্তবতা।
SHARE

Milan Tomic

Hi. I’m Designer of Blog Magic. I’m CEO/Founder of ThemeXpose. I’m Creative Art Director, Web Designer, UI/UX Designer, Interaction Designer, Industrial Designer, Web Developer, Business Enthusiast, StartUp Enthusiast, Speaker, Writer and Photographer. Inspired to make things looks better.

  • Image
  • Image
  • Image
  • Image
  • Image
    Blogger Comment
    Facebook Comment

0 comments:

Post a Comment