বস্তায় সবজি চাষে সাফল্য


রোজায় যাতে অন্তত অতি উচ্চমূল্যে কাঁচা মরিচ আর বেগুন কিনতে না হয়, সে জন্য এই দুটি সবজি চাষের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ময়মনসিংহে অবস্থিত বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মো. আবদুস সালাম। তিনি কাজে নেমে শতভাগ সাফল্যও পেয়েছিলেন। নিজের রান্নাঘরের চাহিদা মেটানো শখের খামারি তিনি নিশ্চয়ই একা নন। কিন্তু আবদুস সালামের বিশেষত্ব হচ্ছে, চাষটি তিনি করেছিলেন বস্তায়।
আফ্রিকা মহাদেশের খরাপ্রবণ এলাকার জন্য জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) বস্তায় সবজি চাষের কৌশল উদ্ভাবন করেছে।
মাৎস্য চাষ বিভাগের অধ্যাপক মো. আবদুস সালাম প্রথম আলোকে জানান, বেশ কয়েক মাস আগে সংবাদপত্রে বস্তায় সবজি চাষে এফএওর সাফল্য নিয়ে প্রতিবেদন দেখে তিনি এ ব্যাপারে আগ্রহী হন। ইন্টারনেটের মাধ্যমে এই পদ্ধতির আদ্যোপান্ত জেনে ছাদে বস্তায় সবজির চাষ শুরু করেন তিনি।
অধ্যাপক সালাম বলেন, ‘প্রথমেই আমি মরিচ, বেগুন, করলা, পুঁইশাক, ঢ্যাঁড়শ, কলমি, চিচিঙা ও বরবটি লাগাই। উদ্দেশ্য ছিল, রোজায় যখন বাজারে শাকসবজির দাম কয়েক গুণ বেড়ে যায়, তখন যেন অন্তত কাঁচা মরিচ ও বেগুন কিনতে না হয়। এতে আমি শতভাগ সফল হয়েছি।'
অধ্যাপক সালাম জানান, পরের ধাপে তিনি শসা, লালশাক ও চালকুমড়া রোপণ করে গত বর্ষায় ভালো ফলন পান। এরপর শীতের সবজি হিসেবে ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটো, শিম, পালংশাক, স্কোয়াশ, ব্রকোলি, ধনেপাতা, লেটুস ও স্ট্রবেরি লাগিয়েছিলেন। এবারও তিনি আশাতীত সাফল্য পেয়েছেন।
অধ্যাপক সালাম বলেন, এফএওর প্রকল্প থেকে মূল ধারণা নিলেও তিনি চাষের ক্ষেত্রে নিজস্ব স্বাতন্ত্র্য বজায় রাখার চেষ্টা করেছেন। চাষের প্রক্রিয়ার বর্ণনা দিয়ে তিনি জানান, বেলে-দোআঁশ মাটির সঙ্গে ছাগল ও ভেড়ার বিষ্ঠার কম্পোস্ট এবং খৈল মিশিয়ে বস্তায় ভরেছি। মিশ্রণের অনুপাত ছিল প্রতি বস্তায় ৩০ কেজি মাটির সঙ্গে ১০ কেজি কম্পোস্ট ও একপোয়া খৈল। ছত্রাকনাশকও প্রয়োগ করা হয়েছে।
এই পরীক্ষা-নিরীক্ষায় অধ্যাপক সালামের সহযোগী তাঁর স্ত্রী বিলকিছ আক্তার জানান, তাঁরা রোগবালাই থেকে মুক্ত রাখার জন্য নিয়মিত বাগান পরিদর্শন করেছেন। পোকা মারতে তামাকপাতা ও মরিচের গুঁড়া সারা রাত ভিজিয়ে রেখে সাবানপানির সঙ্গে মিশিয়ে প্রয়োগ করেছেন। এতে কাজ না হলে ক্ষেত্রবিশেষে রাসায়নিক কীটনাশকের শরণাপন্ন হন।
অধ্যাপক সালাম মনে করেন, বাংলাদেশের খরাপীড়িত উত্তরাঞ্চল এবং লবণাক্ততার শিকার দক্ষিণাঞ্চলে বস্তা-পদ্ধতিতে সবজি চাষ করে অন্তত পারিবারিক প্রয়োজন মেটানো সম্ভব।
‘এই পদ্ধতিতে সবজি চাষ করে আমি অপার আনন্দ পাওয়ার পাশাপাশি আর্থিকভাবেও লাভবান হয়েছি। ভবিষ্যতে সুযোগ পেলে শহরে বসবাসকারী জনগোষ্ঠীকে বস্তায় সবজি চাষে উদ্বুদ্ধ করতে চাই।' প্রথম আলোকে বললেন অধ্যাপক আবদুস সালাম।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের প্রধান অধ্যাপক কামরুল হাছান প্রথম আলোকে জানান, বাংলাদেশে ব্যক্তি উদ্যোগে বস্তায় সবজি চাষ করে সাফল্য পাওয়ার খবর এর আগে তাঁরা শোনেননি। অধ্যাপক সালামের সফলতাকে একটি ‘চমৎকার উদাহরণ' বলে আখ্যা দেন কামরুল হাছান। তিনি বলেন, পদ্ধতিটি সফলভাবে শহরাঞ্চলে বাসার ছাদে এবং খরা ও লবণে আক্রান্ত অঞ্চলে জনপ্রিয় করা গেলে তা দেশের অর্থনীতিতেও ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা যায়।
Photo: বস্তায় সবজি চাষে সাফল্য রোজায় যাতে অন্তত অতি উচ্চমূল্যে কাঁচা মরিচ আর বেগুন কিনতে না হয়, সে জন্য এই দুটি সবজি চাষের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ময়মনসিংহে অবস্থিত বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মো. আবদুস সালাম। তিনি কাজে নেমে শতভাগ সাফল্যও পেয়েছিলেন। নিজের রান্নাঘরের চাহিদা মেটানো শখের খামারি তিনি নিশ্চয়ই একা নন। কিন্তু আবদুস সালামের বিশেষত্ব হচ্ছে, চাষটি তিনি করেছিলেন বস্তায়। আফ্রিকা মহাদেশের খরাপ্রবণ এলাকার জন্য জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) বস্তায় সবজি চাষের কৌশল উদ্ভাবন করেছে। মাৎস্য চাষ বিভাগের অধ্যাপক মো. আবদুস সালাম প্রথম আলোকে জানান, বেশ কয়েক মাস আগে সংবাদপত্রে বস্তায় সবজি চাষে এফএওর সাফল্য নিয়ে প্রতিবেদন দেখে তিনি এ ব্যাপারে আগ্রহী হন। ইন্টারনেটের মাধ্যমে এই পদ্ধতির আদ্যোপান্ত জেনে ছাদে বস্তায় সবজির চাষ শুরু করেন তিনি। অধ্যাপক সালাম বলেন, ‘প্রথমেই আমি মরিচ, বেগুন, করলা, পুঁইশাক, ঢ্যাঁড়শ, কলমি, চিচিঙা ও বরবটি লাগাই। উদ্দেশ্য ছিল, রোজায় যখন বাজারে শাকসবজির দাম কয়েক গুণ বেড়ে যায়, তখন যেন অন্তত কাঁচা মরিচ ও বেগুন কিনতে না হয়। এতে আমি শতভাগ সফল হয়েছি।' অধ্যাপক সালাম জানান, পরের ধাপে তিনি শসা, লালশাক ও চালকুমড়া রোপণ করে গত বর্ষায় ভালো ফলন পান। এরপর শীতের সবজি হিসেবে ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটো, শিম, পালংশাক, স্কোয়াশ, ব্রকোলি, ধনেপাতা, লেটুস ও স্ট্রবেরি লাগিয়েছিলেন। এবারও তিনি আশাতীত সাফল্য পেয়েছেন। অধ্যাপক সালাম বলেন, এফএওর প্রকল্প থেকে মূল ধারণা নিলেও তিনি চাষের ক্ষেত্রে নিজস্ব স্বাতন্ত্র্য বজায় রাখার চেষ্টা করেছেন। চাষের প্রক্রিয়ার বর্ণনা দিয়ে তিনি জানান, বেলে-দোআঁশ মাটির সঙ্গে ছাগল ও ভেড়ার বিষ্ঠার কম্পোস্ট এবং খৈল মিশিয়ে বস্তায় ভরেছি। মিশ্রণের অনুপাত ছিল প্রতি বস্তায় ৩০ কেজি মাটির সঙ্গে ১০ কেজি কম্পোস্ট ও একপোয়া খৈল। ছত্রাকনাশকও প্রয়োগ করা হয়েছে। এই পরীক্ষা-নিরীক্ষায় অধ্যাপক সালামের সহযোগী তাঁর স্ত্রী বিলকিছ আক্তার জানান, তাঁরা রোগবালাই থেকে মুক্ত রাখার জন্য নিয়মিত বাগান পরিদর্শন করেছেন। পোকা মারতে তামাকপাতা ও মরিচের গুঁড়া সারা রাত ভিজিয়ে রেখে সাবানপানির সঙ্গে মিশিয়ে প্রয়োগ করেছেন। এতে কাজ না হলে ক্ষেত্রবিশেষে রাসায়নিক কীটনাশকের শরণাপন্ন হন। অধ্যাপক সালাম মনে করেন, বাংলাদেশের খরাপীড়িত উত্তরাঞ্চল এবং লবণাক্ততার শিকার দক্ষিণাঞ্চলে বস্তা-পদ্ধতিতে সবজি চাষ করে অন্তত পারিবারিক প্রয়োজন মেটানো সম্ভব। ‘এই পদ্ধতিতে সবজি চাষ করে আমি অপার আনন্দ পাওয়ার পাশাপাশি আর্থিকভাবেও লাভবান হয়েছি। ভবিষ্যতে সুযোগ পেলে শহরে বসবাসকারী জনগোষ্ঠীকে বস্তায় সবজি চাষে উদ্বুদ্ধ করতে চাই।' প্রথম আলোকে বললেন অধ্যাপক আবদুস সালাম। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের প্রধান অধ্যাপক কামরুল হাছান প্রথম আলোকে জানান, বাংলাদেশে ব্যক্তি উদ্যোগে বস্তায় সবজি চাষ করে সাফল্য পাওয়ার খবর এর আগে তাঁরা শোনেননি। অধ্যাপক সালামের সফলতাকে একটি ‘চমৎকার উদাহরণ' বলে আখ্যা দেন কামরুল হাছান। তিনি বলেন, পদ্ধতিটি সফলভাবে শহরাঞ্চলে বাসার ছাদে এবং খরা ও লবণে আক্রান্ত অঞ্চলে জনপ্রিয় করা গেলে তা দেশের অর্থনীতিতেও ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা যায়।
SHARE

Milan Tomic

Hi. I’m Designer of Blog Magic. I’m CEO/Founder of ThemeXpose. I’m Creative Art Director, Web Designer, UI/UX Designer, Interaction Designer, Industrial Designer, Web Developer, Business Enthusiast, StartUp Enthusiast, Speaker, Writer and Photographer. Inspired to make things looks better.

  • Image
  • Image
  • Image
  • Image
  • Image
    Blogger Comment
    Facebook Comment

0 comments:

Post a Comment