ভিয়েতনাম কৈ-এর চাষ ব্যবস্থাপনা



পুকুর নির্বাচন কৈ মাছ চাষের জন্য পুকুর নির্বাচন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মাছ চাষের জন্য - মাস পানি থাকে রকম ১৫-২০০ শতাংশের পুকুর নির্বাচন করতে হবেতবে এর চেয়ে ছোট অথবা বড় পুকুরেও মাছ চাষ করা যায়

পুকুর প্রস্তুতি:
·         পুকুরের পাড় মেরামত জলজ আগাছা পরিষ্কার করতে হবে
·         পুকুর সেচে পানি শুকিয়ে অবাঞ্ছিত মাছ প্রাণী দূর করাতে হবেপুকুর শুকানো সম্ভব না হলে রেটেনন প্রয়োগ করে (৪০ গ্রাম/শতাংশ) রাক্ষুসে মাছ অন্যান্য প্রাণী নিধন করতে হবে
·         প্রতি শতাংশে কেজি হারে চুন প্রয়োগ আবশ্যক
·         চুন প্রয়োগের দিন পরে পোনা মজুদের ব্যবস্থা নিতে হবে
পোনা মজুদের পূর্বে পুকুরের চারদিকে নাইলন নেটের ফেনসিং দিতে হবেপোনা মজুদ হ্যাচারী থেকে সংগৃহিত সুস্থ-সবল ধানী পোনা সংগ্রহ করে নিুলিখিত ছক অনুযায়ী চাষের পুকুরে মজুদ করা যেতে পারেসরাসরি মজুদের ক্ষেত্রে (নার্সরী না করে) কিছু পোনা মারা যেতে পারে বিধায় ১৫-২০% বেশি মজুদ করা ভালমজুদের সময় পোনাকে মজুদকৃত পুকুরের পানির সাথে কন্ডিশনিং করে ছাড়তে হবেসম্ভব হলে কিছু দিন (১৫-২০) চারা পুকুরে রেখে ওজন - গ্রাম হলে বড় মাছগুলো বেছে নিয়ে পালন পুকুরে মজুদ করলে ভাল ফল পাওয়া যাবে

মাছের প্রজাতি (মজুদ ঘনত্ব/শতাংশ)একক চাষমিশ্র চাষ ১মিশ্র চাষ ২মিশ্র চাষ ৩
ভিয়েতনাম কৈ৬০০-৭০০৩০০-৪০০৪০০-৫০০৫০০-৬০০
শিং/ মাগুর১০০৭৫৫০
কমন কার্প
সরপুঁটি
রুই
সিলভার কাপ


কৈ মাছের পুষ্টি চাহিদা :
ভিয়েতনাম কৈ মাছের আমিষ চাহিদা বিশেষ করে প্রাণিজ আমিষের চাহিদা কার্প বা রুই জাতীয় মাছের চাইতে বেশিকৈ মাছের আমিষের চাহিদা ৩৫-৪০% পুকুরের প্রাকৃতিক খাদ্য হতেও কৈ মাছের আমিষের কিছুটা চাহিদা পূরণ হয়ে থাকেডুবন্ত ভাসমান উভয় ধরণের খাবার প্রয়োগ করা যেতে পারে তবে ভাসমান খাবরই উত্তম
ভিয়েতনাম কৈ মাছের খাদ্য প্রয়োগ তালিকা

দিন                   খাদ্য প্রয়োগ হার (দৈহিক ওজনের)   খাদ্য প্রয়োগ মাত্রা
-                   ৫০%                                                      বার
১০-১৯             ৩৫-৪০%                                                  বার
২০-২৯               ২৫-৩০%                                                বার
৩০-৩৯              ২০-২৫%                                                 বার
৪০-৪৯              ১৫-২০%                                                 বার
৫০-৫৯              ১০-১৫%                                                 বার
৬০-৬৯             ১০-১২%                                                  বার
৭০-৭৯               -১০%                                                  বার
৮০-৭৯              -%                                                     বার
৯০-৯৯              -%                                                     বার
১০০-১০৯          -%                                                     বার
১১০-১২০           -%                                                     বার

  •  প্রতি ১০-১৫ দিন পর পর জাল টেনে মাছের বৃদ্ধি পর্যবেক্ষণ করে খাবারের পরিমাণ নির্ধারণ করতে হবে
  • প্রতি ১৫ দিনে একবার প্রোবায়োটিক ব্যবহার করলে মাছের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে পানির পরিবেশ ভাল থাকবে
  • পোনা মজুদের পর ৩০ দিন পর পর শতাংশ প্রতি ১৫০ গ্রাম হারে জিওলাইট প্রয়োগ করতে হবে
  • মাছ নিয়মিত খাবার খায় কিনা সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে
  •  মজুদ পুকুরে প্রতি ১৫-২০ দিনে ২০-৩০% পানি পরিবর্তন করা উত্তম
  • প্রতি ১৫ দিন অন্তর পানির গুণাগুণ যেমন পানির তাপমাত্রা, অক্সিজেন, পিএইচ, অ্যামোনিয়া মোট ক্ষারকত্ব নির্ণয় করা আবশ্যকঅ্যামোনিয়ার পরিমাণ বেড়ে গেলে বাজারে প্রচলিত একোয়া-কেমিক্যাল ব্যবহার করে অ্যামোনিয়া দুরীকরণের ব্যবস্থা গ্রহন করেত হবেখাদ্য সংরক্ষণ পদ্ধতি
  •  শুকনো পিলেট খাদ্য বায়ুরোধী পলিথিনের বা চটের অথবা কোন মুখবন্ধ পাত্রে ঠান্ডা শুষ্ক জায়গায় সংরক্ষণ করতে হবেমাঝে মাঝে এই খাদ্য পুনরায় রোদে শুকিয়ে নিলে ভাল হয়
  •  স্টোরে বা গুদাম ঘরে সংরক্ষিত পিলেট খাদ্য মেঝেতে না রেখে কাঠের পাটাতনের ওপর রেখে সংরক্ষণ করা ভাল
  • সংরক্ষিত পিলেট খাদ্য - মাসের মধ্যে ব্যাবহার করে ফেলা উচিত

মাছ আহরণ উৎপাদন
আধা-নিবিড় পদ্ধতিতে চাষ করলে - মাসের মধ্যে ভিয়েতনাম কৈ মাছের ওজন গড়ে ১৫০-২০০ গ্রাম হবে সময়ে জাল টেনে এবং পুকুরের সমস্ত পানি শুকিয়ে মাছ ধরার ব্যবস্থা নিতে হবেআধা-নিবিড় পদ্ধতিতে - মাসে একর প্রতি সর্বমোট -১০ টন উৎপাদন পাওয়া সম্ভব

ভিয়েতনাম কৈ-এর সাধারণ রোগ প্রতিকার
উচ্চ মজুত ঘনত্ব বদ্ধ জলজ পরিবেশে পরিত্যক্ত খাবার, মাছের বিপাকীয় বর্জ্য অন্যান্য আবর্জনা পচনের ফলে পানি দূষিত হলে ভিয়েতনাম কৈ মাছের রোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়কোন খামারে একবার জীবাণু প্রবেশ করলে তাকে সমূলে উচ্ছেদ করা অত্যন্ত কঠিনতাই খামারে জীবাণু প্রবেশের সব ধরণের পথ বন্ধ করে দেয়াই আদর্শ মৎস্য চাষির কর্তব্যরোগের ঝুঁকি কমানোর মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধ করা সবচেয়ে সুবিধাজনক পদ্ধতি।  নিম্নলিখিত সতর্কতা অবলম্বনের মাধ্যমে রোগের ঝুঁকি কমানো সম্ভব -
·         নিরোগ সবল মাছের পোনা সংগ্রহ
·         খামার মাছ চাষের যাবতীয় সরঞ্জাম জীবাণু মুক্তকরণ
·         পারত:পক্ষে এক খামারের মাছ ধরার জাল অন্য খামারে ব্যবহার না করা
·         উচ্চ মজুদ হার পরিহার করা
·         সকল প্রকার জীবাণু বাহক দূরে রাখার ব্যবস্থা করা
·         পরিমিত সুষম খাবার প্রয়োগ
·         খামার মাছের পরিচর্যা নিশ্চিতকরণসাধারণত পরিবহণের সময় পোনা আঘাতপ্রাপ্ত হেলে ক্ষত রোগের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায় ছাড়াও পালন পুকুরে কৈ মাছের ক্ষত রোগ হতে পারেচাষী পর্যায়ে এই রোগের প্রতিরোধ প্রতিকারের জন্য নিুরূপ ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে -
·         ক্ষত রোগের প্রাদুর্ভাব হলে পুকুরে জীবানুনাশক ব্যবহার করতে হবেএকই সাথে এন্টিবায়োটিক হিসাবে গ্রাম অক্সিটেট্রাসাইক্লিন প্রতি কেজি খাবারের সাথে মিশিয়ে ১০ দিন প্রয়োগ করতে হবে
·         জীবাণুনাশক হিসাবে কৈ মাছের পুকুরে জিওলাইট/প্রোবায়োটিক ব্যবহার করা যেতে পারেজিওলাইট ব্যবহার মাত্রা - প্রতি একর পুকুরে ( মিটার গভীরতা) কেজি
·         পোনা মজুদের পর প্রতি শতাংশে প্রতি ফুট পুকুরের জন্য গ্রাম পটাশিয়াম পারম্যঙ্গানেট ব্যবহারে ভাল ফল পাওয়া যায়শীতকালে ক্ষত রোগে আক্রান্ত মাছের জন্য পটাশিয়াম পারম্যঙ্গানেট ট্রিটমেন্টের পাশাপাশি প্রতি শতাংশ ফুট পুকুরে .-. কেজি লবণ ব্যবহার করা যেতে পারে

অন্যান্য প্রয়োজনীয় পরামর্শ
·         ভিয়েতনাম কৈ মাছ চাষের জন্য সম্পূরক খাদ্যে প্রাণিজ আমিষ (ফিশ মিল, মিট বোন মিল, প্রোটিন কনসেন্ট্রেট, বাড মিল ইত্যাদি) এবং ভিটামিন অবশ্যই ব্যবহার করতে হবেএধরনের মাছ চাষের জন্য ভাসমান পিলেট জাতীয় খাদ্যই সবচেয়ে ভাল
·         ডুবন্ত খাবারের ক্ষেত্রে মাঝে মাঝে পুকুরে যে সমস্ত স্থানে খাদ্য প্রয়োগ করা হয় সমস্ত স্থান খাবার প্রয়োগের ঘন্টা পর পর্যবেক্ষণ করে দেখা উচিতযদি সেখানে খাবার পাওয়া যায় তা হলে বুঝতে হবে মাছ খাবার খাচ্ছে না অথবা খাবার বেশী দেওয়া হচ্ছে
·         গ্রীষ্মকালে অনেক সময় পুকুরের পানি কমে যায় এবং তাপমাত্রা বেড়ে যায়তখন অনেক সময় পানিতে অক্সিজেনের ঘাটতি হয়এরকম পরিস্থিতিতে খাবার প্রয়োগ কমিয়ে দিতে হবে
·         একটান মেঘলা অবহাওয়ায় কিংবা অতিরিক্ত বৃষ্টি হলে খাবারের পরিমাণ কমিয়ে দিতে হবে অথবা একেবাওে বন্ধ করে দিতে হবে
·         পোনা মাছের ক্ষেত্রে সপ্তাহে একবার এবং চাষযোগ্য মাছের ক্ষেত্রে ১৫ দিনে একবার নমুনা সংগ্রহ করে গড় বৃদ্ধির সাথে সঙ্গতি রেখে মোট খাদ্যের পরিমাণ ঠিক করে নিতে হবে

ভিয়েতনাম কৈ মাছের পোনা প্রাপ্তি বিষয়ে স্বর্ণলতা এগ্রো ফিশারিজ লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ আব্দুল কাদির তরফদার জানান, দেশে একমাত্র আমার প্রতিষ্ঠান ভিয়েতনাম কৈ মাছের পোনা সরবরাহ করতে পারবে এজন্য আগ্রমী খামারী ভাইয়েরা যোগাযোগ (মোবাইল: ০১৭১১ ১৬৮ ২০৫ অথবা ০১৭১২ ১৫২ ১৪০) করতে পারেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ ০১৭১৭ ৫২৬০৭০
SHARE

Milan Tomic

Hi. I’m Designer of Blog Magic. I’m CEO/Founder of ThemeXpose. I’m Creative Art Director, Web Designer, UI/UX Designer, Interaction Designer, Industrial Designer, Web Developer, Business Enthusiast, StartUp Enthusiast, Speaker, Writer and Photographer. Inspired to make things looks better.

  • Image
  • Image
  • Image
  • Image
  • Image
    Blogger Comment
    Facebook Comment

0 comments:

Post a Comment