টি-শার্ট ব্যবসা - কিভাবে শুরু করবেন আর কি কি করতে হবে?


By WebJockey-Mahabubur Rahaman Arman in চাকরি খুঁজব না চাকরি দেব (Files)
আমার আগের ডক টার বরাত (https://www.facebook.com/groups/uddokta/doc/369719919774787/) দিয়ে বলতে চাই এই ব্যবসা এ নামতে হলে চোখ কাআন খোলা রাখবেন। ৩ ভাবে শুরু করতে পারেন এই ব্যবসা। ভয় পাবেন না।

১. স্টক এর বানানো টিশার্ট কিনে তাতে প্রিন্ট করিয়েঃ 

এ ক্ষেত্রে যা করা হয় তা হল, সলিড বা এক রঙের টিশার্ট কিনে নেয়া হয় কম দামে। অল্প টাকায় অনেক পাওয়া যায়। তারপর একটা প্রিন্টিং কারখানায় নিয়ে গিয়ে তাতে প্রিন্ট বশিয়ে আয়রন আর প্যাকিং করে নিলেই তৈরী।

এক্ষেত্রে সুবিধাঃ
*
সহজে প্রাপ্যতা
*
কম সময়ে পণ্য তৈরী
*
দাম কম হওয়াতে অনেক টিশার্ট কেনা যায়

এক্ষেত্রে অসুবিধাঃ 
*
কাপড় মান সম্পন্ন হয় না
*
অনেক ক্ষেত্রে অতিরিক্ত সেলাই খরচ পোষাতে হয়।
*
ধোয়ার পর কাপড়ের রঙ উঠে
*
কাপড় হতে ভুশকী ঊঠে
*
রঙ জ্বলে যায়
*
সাইজ ট্যাগ ভুল থাকে

এই ক্ষেত্রে আমার মতামতঃ এই কাজ থেকে দূরে থাকুন। এই মানের পণ্য নিয়ে ব্রান্ডিং করা সম্ভব না। কাস্টমার ফিরে ও তাকাবে না ২য় বার।

২. টিশার্ট নিজে বানিয়ে তারপর প্রিন্ট করেঃ 

এক্ষেত্রে যা যা করতে হয় তা নিচে সঙ্কখেপে বরণনা দেয়া হলোঃ

*
একটা সুষ্ঠ পরিকল্পনাঃ প্রথমে দরকার একটি সুষ্ঠ পরিকল্পনা। এ সময় পারটনার থাকলে কাজ ভাগ করে নিন। কারন সামনে অনেকটা পথ যেতে হবে। একা পেরে নাও উঠতে পারেন। তো পরিকল্পনা যেনো সুদূরপ্রসারী হয়। অনেক হোচট খেতে হতে পারে। 

*
টার্গেট ফিক্স করে নেয়াঃ কাদের কাছে বিক্রি করবেন তার একটা টার্গেট লিস্ট বানান কাজে দিবে। কারন সবাই সব ডিজাইন পড়বে না। আর কত পিস বানাবেন সেটা ও ধারনা করে নিন। 

*
ভালো কিছু ডিজাইন বানানোঃ আকর্ষণীয় ডিজাইন নিয়ে কাজ করুন। মানুষ কিন্তু টিশার্ট একটা কারনেই কিনে থাকে আর তা হল ডিজাইন। ডিজাইন এর ব্যাপারে আমি আমার একটা নিয়ম ধরে হাটি, সেটি হল,
SICK =
S for Stylish,
I for Innovative,
C for Creative & Confident and
K for Knowledge.

*
ডায়িং ফ্যাক্টরী জোগাড় করাঃ এটা করা খুব জরূরী প্রথমে বেশি খরচ করে হলেও একটা ডায়িং ফ্যাক্টরী কে হাত করতে হবে। আবার উনাদের গিয়ে বইলেন না যে এটা আমি বলে দিসি। না পেলে আমি আছি।

*
গারমেন্টস ফ্যাক্টরী জোগাড় করাঃ সবচেয়ে কঠিন কাজ এটা। ছোটো কাজ গুলো গারমেন্টস ফ্যাক্টরী গুলা নিতে চায় না নিতে চাইলেও এমন ডিমান্ড করে যা পোষানো সম্ভব না! খুজে দেখুন হয়তো পেয়ে যাবেন। না পেলে এই অধম তো আছেই। ভ্রু কুচকাইয়েন নাহ।

*
ডিজাইন প্রিন্টিং এর ফ্যাক্টরী জোগাড় করাঃ এটা একটু কঠিন হয়ে যায়। কিন্তু এখন এতা খুবি সহজ। প্রথমবার যেমন করেই হোক রাজী হয়ে যান একটা পেলে। পরের বার না হয় বোঝাপরা করে নিলেন :)। এদের ডিজাইন গুলো দিয়ে দিন। এরা ডাইজ বানায় রাখবে কাজ এগিয়ে যাবে কিছু এডভান্স দিয়ে দিয়েন। আবারো ভ্রু কুচকালেন? ভাই আমি তো আছি এ নাকি? 

*
কাপড় কেনাঃ কি মানের কাপড় কিনবেন তা সম্পর্কে পূর্বে ধারনা থাকাটা বাঞ্ছনীয়। কাপড় সাধারনত কাপড় এর ঘনত্ব এর উপর ডিপেন্ড করে। কাপড় ও সেলাই ভালো দিতে হবে তাহলে ভালো রেসপন্স পাবেন। কাপড়ের মান যাচাই করে নিন আগে। কাপড়ের জিএসএম কত তা জেনে নিন। ১৬০ এর উপরের জিএসএম এর কাপড় আমার চোখে অনেক ভাল। তবুও আমি ১৮০ কেই প্রাধান্য দেই। শীতের পোষাক এর জন্য ২০০+ জি এস এম নিতে হবে। ভুলেও ইন্ট্যাক্ট কাপড় কিনবেন না যা আগে থেকেই রঙ করা থাকে। কাপড় নারায়ঙ্গঞ্জ এ কিনতে পাওয়া যায়। ২নং রেইল গেট এ ডান দিকে হাটতে থাকলে পাগল হয়ে যাবেন কাপড়েদ দোকান দেখতে দেখতে চাষাড়া এর। কিন্তু ভালো মানের গ্রে কাপড় টা কিনতে দেয়া ভালো হবে আপনার গার্মেন্টস কেই। কারন ওদের জি এস এম মেনশন করে দিলে ওরা ভালো কাপড় এনে দিবে। অনেক ক্ষেত্রে ওরা কমে ও এনে দিতে পারে। আর আপনি কিনতে গেলে আপনার গলা কাটবে এটা স্বাভাবিক। কারন আপনি নতুন। খারাপ দিয়ে দিলে কিছু করার নাই! তাই যার কাছ থেকেই কাপড় কিনবেন একটু ভাল সম্পর্ক হলে ভালো হবে। ক্ষতি হবে না। কারন কাপড়ের উপরের পার্শ্ব টাই আসল না! ভেতর টাই আসল। ছেড়া থাকতে পারে, গোলাকৃতির চাক্তির মত কাটা থাকতে পারে। ফাটা থাকতে পারে। আর গ্রে কাপড় টা যত টা পারবেন মাটিতে না রাখার চেষ্টা করবেন।

*
ডায়িং করানোঃ ডায়িং টা সবচেয়ে বেশি ঝামেলাকর। খুব সাব্ধানে করতে হবে। তাদের স্যাম্পল কালার দিয়ে আসবেন যাতে কালার এ হেরফের না হয়। একটু এদিক সেদিক হলেই কালার পালটে আরেকটা হয়ে যাবে। আর একবার রঙ হয়ে গেলে ঝামেলা। ডায়িং ফ্যাক্টরীতে কোন রঙের কত কেজি কাপড় হবে আর রঙ এর স্যাম্পল দিয়ে আসলেই ওরা করে দিবে যদি অদের আপনার কালার ক্যাপচারিং আইডিয়া থাকে। তবে আমি বল্বো বলে দিয়ে আসা টাই ভালো।

*
ডায়িং থেকে গারমেন্টস ফ্যাক্টরী তে কাপড় স্থানান্তরঃ ডায়িং ফ্যাক্টরী থেকে কাপড় ডায়িং শেষ হবার পর তা গারমেন্টস ফ্যাক্টরীতে পাঠাতে হবে।

*
কি কি সাইজ এর টিশার্ট বানাবেন তার ধারনাঃ গারমেন্টস ফ্যাক্টরীতে আপনার টিশার্ট এর মেজারমেন্ট চার্ট আর রেশিও দিয়ে আসতে হবে। সাইজ হিসেবে করতে পারেন S, M, L, XL মেজারমেন্ট এ থাকবে টিশার্ট এর মাপ কোন সাইজ কি মাপের হবে আর কি তাই, আর রেশিও তে থাকবে প্রতি ১২ পিস এ আপনি কত পিস S, M, L, XL সাইজের টিশার্ট করতে চাইছেন যেমন 2:4:4:2 = 12

*
কাপড় কাটানোঃ গারমেন্টস ফ্যাক্টরী থেকে আপনাকে আপনার মেজারমেন্ট অনুযায়ী কাপড় কেটে দেয়ার পর তা নিয়ে আসবেন কারন তা আপনার প্রিন্টিং ফ্যাক্টরী কে দিতে হবে প্রিন্ট করতে। 

*
প্রিন্টিং এ পাঠানোঃ এবার প্রিন্টিং ফ্যাক্টরী তে কোন ডিজাইন এর কতগুলো টিশার্ট হবে তা তাদের বুঝায় দিয়ে আসতে হবে। 

*
প্রিন্ট করানোঃ এবার প্রিন্টিং ফ্যাক্টরী তে কোন ডিজাইন গুলো প্রিন্ট করানোর সময় তাদের দিয়ে পারলে দাঁড়ায় থেকে প্রিন্ট করিয়ে নিবেন তারা যেদিন আপনাকে সময় দিবে। প্রতিটা চেক করে নিবেন আর দেখে নিবেন যাতে অবাঞ্ছিত কোনো দাগ না পরে।

*
প্রিন্ট থেকে এনে সেলাই এর জন্য তৈরী করাঃ প্রিন্ট করা শেষ হবার পর ভালোভাবে শুকানোর পর তা গারমেন্টস এ পৌঁছে দিন আবার। দেখেবেন যাতে কোনো টা কোনো টার সাথে না লেগে থাকে।

*
সেলাই করানোঃ এবার গারমেন্টস ফ্যাক্টরী কে দিয়ে নিখুত ভাবে সেলাই করিয়ে নিন। তাদের বলে দিন যে আপনার সেলাই এর ধরন কেমন হবে? আপনার ব্র্যান্ড লেবেল আর সাইজ লেবেল আপনি ই প্রোভাইড করুন। এটাই বেশি ভালো।

*
কাপড় আয়রন করানোঃ ভালোভাবে আয়রন করে নিন যাতে অতিরিক্ত কোনো ভাজ না পড়ে। এ ক্ষেত্রে খেয়াল রাখবেন যাতে ৫-১০ টা এক সাথে আয়রন না করে।

*
পলি প্যাক করানোঃ ভালো মানের পলি প্যাক এ প্যাকিং করুন। আকরষনীয় মোড়ক ও অনেক ক্ষেত্রে পণ্য বিক্রি তে সাহায্য করে। স্ট্যান্ডার্ড সাইজ এর পলি প্যাক ব্যবহার করুন। সিটি প্লাজা মারকেট এর নিছতলা তেই আকজন হুজুর বিক্রি করে অগুলা ভালোই যেগুলা স্টিকার লাগানো থাকে।

*
কারটন করানোঃ ভালো এবং পোক্ত মানের কারটন এ পলি করা টিশার্ট গুলো রাখতে হবে। আমার পরিচিত একজন আছে যিনি কারটন এ ব্র্যান্ডিং করে দিতে পারবে আর কারটন বানায় দিতে পারবে।

*
পরিবহনঃ সহজে ঊথানো নামানো যায় এমন ব্যবস্থা গ্রহন করুন। ঢাকার বাইরে পাঠাতে কুরিয়ার সারভিস ব্যবহার করুন। তবে খরচ যত কমাতে পারেন ততি মঙ্গল।

*
বিক্রয় শুরুঃ এবার দেদারসে টারগেটেড মানুষদের কাছে বিক্রি শুরু করুন।

এক্ষেত্রে সুবিধাঃ
*
কাপড় মান সম্পন্ন হয়
*
গ্রাহক বৃদ্ধি পায়
*
ধোয়ার পর কাপড়ের রঙ উঠবে না
*
কাপড় হতে ভুশকী ঊঠে না
*
রঙ জ্বলে যায় না
*
সাইজ ট্যাগ ঠিক থাকে

এক্ষেত্রে অসুবিধাঃ 
*
সময় সাপেক্ষ
*
ডায়িং ফ্যাক্টরী পাওয়া যায় না
*
গারমেন্টস ফ্যাক্টরী পাওয়া দুষ্কর
*
হাতের কাছে প্রিন্টিং ফ্যাক্টরী পাওয়া যায় না
*
প্রিন্ট নষ্ট হয়ে যাওয়ার ভয় থাকে
*
বিক্রি না হবার ভয় থাকে

এই ক্ষেত্রে আমার মতামতঃ এই মানের পণ্য নিয়ে ব্রান্ডিং করা সম্ভব। কাস্টমার ফিরে ফিরে আসবে। প্রয়োজনে মাসে একটি মেলা করুন। যেভাবেই হোক করুন মার্কেটিং, প্ডিরাইজ না কমিয়ে ডিস্কাউন্ট দিন বিক্রি আবার না হয় কেমনে তখন দেখবো নে?

৩. ফুল মেড টিশার্ট কিনে 

এ ক্ষেত্রে যা করা হয় তা হল, টিশার্ট পুরাই রেডি থাকে। আপনি শুধু কিনবেন আর বিক্রি করবেন।

এক্ষেত্রে সুবিধাঃ
*
সহজে প্রাপ্যতা
*
বহু ডিজাইন
*
দাম কম হওয়াতে অনেক টিশার্ট কেনা যায়

এক্ষেত্রে অসুবিধাঃ 
*
কাপড় মান সম্পন্ন হতে নাও পারে
*
অনেক ক্ষেত্রে অতিরিক্ত সেলাই খরচ পোষাতে হতে পারে
*
ধোয়ার পর কাপড়ের রঙ উঠতে পারে
*
কাপড় হতে ভুশকী ঊঠতে
*
রঙ জ্বলে যেতে পারে
*
সাইজ ট্যাগ ভুল থাকতে পারে
*
এক সাথে অনেক কিনে রাখতে হয়

এই ক্ষেত্রে আমার মতামতঃ অনেক টাকা পয়সা না থাকলে এটা না করাই ভালো। এতাকে বলা হয় স্টকলট এর ব্যবসা। এই মানের পণ্য নিয়ে ব্রান্ডিং করা সম্ভব না। তবে ভালো আয় হবে।

৪. আমাকে সাহায্য করুনঃ 

কিভাবেঃ
*
আমার পন্যের বাজার সৃষ্টি করে দিন। ১-২ টা হলে আপনি শুধু কাস্টমার এর যোগাযোগ এর ঠিকানা দিয়ে দিবেন। আমরা যোগাযোগ করে নিবো, এর বেশি হলে মানে অর্ডার হলে কমপক্ষে ৫০+ পিস এর জন্য সব কিছু আপনাকে হ্যান্ডল করতে হবে। পন্য আনা নেয়ার ব্যাপারটা। আর ক্লায়েন্ট এর সাথে যোগাযোগ করবো আমরা।
*
অর্ডার যোগাড় করে দিতে হবে। না করতে পারলে কোনো জোড় জবরদস্তি নেই।
*
আমাদের মার্কেটিং করতে হবে।

আপনি কি পাবেনঃ
*
প্রতি ক্ষেত্রে কমিশন পাবেন।

ডকটি বানিয়েছি আমি সম্পূর্ণ নিজের অভিজ্ঞতা থেকে। সাহায্য লাগলে বলবেন আমাকে।

মাহাবুবুর রহমান আরমান (আরাজ রহমান) 
টি-জোন (পোশাক)
পূর্ব বাসাবো, ঢাকা-১২১৪
ফেইসবুকঃ https://www.facebook.com/arshadhin 
স্কাইপঃ arazmix
টুইটারঃ arazmix
ফোনঃ 01813854079, 01670724341
ই-মেইলঃ armantring@gmail.com
ব্র্যান্ড ফেইসবুক পেইজঃ https://www.facebook.com/TZONEBD
SHARE

Milan Tomic

Hi. I’m Designer of Blog Magic. I’m CEO/Founder of ThemeXpose. I’m Creative Art Director, Web Designer, UI/UX Designer, Interaction Designer, Industrial Designer, Web Developer, Business Enthusiast, StartUp Enthusiast, Speaker, Writer and Photographer. Inspired to make things looks better.

  • Image
  • Image
  • Image
  • Image
  • Image
    Blogger Comment
    Facebook Comment

0 comments:

Post a Comment