ঘরসজ্জার চারা বিক্রি থেকে ভাড়া

আজকাল ব্যাংক-বীমা থেকে শুরু করে কোনো অফিসে প্রবেশ করলেই চোখে পড়বে টবে রাখা গাছ। এগুলোকে বলে ইনডোর গাছ বা ঘর সজ্জার গাছ। নার্সারি করে এসব গাছ যেমন বিক্রি করা যায়, তেমনি ভাড়াও দেওয়া যায়। জায়গাও লাগে অল্প। বিস্তারিত জানাচ্ছেন সিদ্ধার্থ সাই

 ঘর সাজানোর সাড়ে আট শর মতো প্রজাতির গাছ আছে। এর মধ্যে কিছু গাছ ঝুলিয়ে রাখার আর কিছু মেঝেতে রাখার উপযোগী। ঝুলিয়ে রাখা গাছের মধ্যে আছে পাইকাস, মনস্টিয়া, ম্যানিপ্লান্ট, ক্যাঙারু পকেট অর্কিড, ভেন্ডা অর্কিড, লিপস্টিক অর্কিড, ক্যাটালিয়া অর্কিড, বেবিরোজ ইত্যাদি। অর্কিডগুলো সাধারণত বিদেশি হয়ে থাকে। ফ্লোরে রাখার উপযোগী গাছের মধ্যে বনসাই, মেরেন্ডা, বিভিন্ন প্রজাতির ফার্ন, অগ্নীশ্বর, আপেল পাতাবাহার বেশি বিক্রি হয়। সাইজ ও প্রজাতিভেদে গাছগুলোর দাম ২০ টাকা থেকে শুরু করে ৩৫ হাজার টাকা পর্যন্ত।

নার্সারি করতে যা লাগবে
ঘর সাজানোর এসব গাছের নার্সারি করতে খুব বেশি জায়গা লাগে না। ৭০০ থেকে ৮০০ বর্গফুট জায়গা হলেই চলে। শহরে বাড়ির ছাদেই এসব গাছ চাষ করতে পারেন। আর জেলা বা উপজেলায় চাষ করতে পারেন বাড়ির আঙ্গিনায়। তবে মোট জায়গার একটি কোণে একটা ঘর রাখতে হবে, যেখানে অর্কিড ও ছায়ার গাছগুলো চাষ করতে হবে। লাগবে চাষযোগ্য মাটি, যা ভালো কোনো ফসলি জায়গা থেকে নিয়ে আসতে হবে। অথবা আশপাশে যে মাটি আছে, তার সঙ্গে কম্পোস্ট সার মিশিয়েও চাষযোগ্য করে নেওয়া যায়। পর্যাপ্ত পানির নিশ্চয়তাও লাগবে। লাগবে পলিথিন কাগজ, যার মধ্যে গাছের চারা করা যায়। আর লাগবে নারিকেলের ছোবড়া। যার মধ্যে অর্কিড গাছগুলো থাকবে। অর্কিড গাছে সরাসরি পানি দেওয়া যায় না। এ জন্য লাগবে স্প্রে মেশিন। অর্কিডগুলো ছোবড়ার মধ্যে লাগিয়ে পলিথিন দিয়ে মুড়িয়ে দিতে হবে। এরপর সুতা দিয়ে বেঁধে ঝুলিয়ে দিতে হবে। ছোবড়া ভিজে এমন পানি দুই বেলা দিয়ে ২০-২৫ দিন রেখে দিতে হবে। শিকড় ছোবড়া ধরে ফেললে পলিথিন সরিয়ে ফেলতে হবে। তখন এটা বিক্রি করার উপযোগী হয়ে যাবে।

কোথায় পাওয়া যাবে
চাষের জিনিসপত্র সরকারি হর্টিকালচারগুলোতে পাওয়া যাবে। এ ছাড়া ঢাকার মিরপুর, ঢাকা কলেজ গেট, শানারপাড়, শিশু একাডেমী, ধানমণ্ডিতেও গাছ চাষের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পাওয়া যাবে। এ ছাড়া দেশের অনেক উপজেলায় আছে ব্র্যাক ও স্কয়ারের নার্সারি। চাইলে এখান থেকেও গাছসহ অন্যান্য উপকরণ সংগ্রহ করতে পারেন।

গাছের দরদাম
ঝুলিয়ে রাখা গাছের মধ্যে পাইকাস প্রতিটি
৫০-১০০ টাকা, মনস্টিয়া ৫০-১০০ টাকা, ম্যানিপ্লান্ট ২০-২০০ টাকা। আর অর্কিডের মধ্যে ক্যাঙারু পকেট অর্কিড ১০০-৫০০ টাকা, ভেন্ডা অর্কিড
২০০-১০০০ টাকা, লিপস্টিক অর্কিড ১০০-৫০০ টাকা, ক্যাটালিয়া অর্কিড ২০০-৬০০ টাকা। এ ছাড়া বেবিরোজ ৫০০-১০০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাবে। ফ্লোরে রাখার মতো গাছের মধ্যে বনসাই পাওয়া যাবে ১০০০ থেকে এক লাখ টাকার মধ্যে, বিভিন্ন প্রজাতির ফার্ন ৫০-২০০ টাকার মধ্যে, অগ্নীশ্বর ৫০-৫০০ টাকা, আপেল পাতাবাহার পড়বে ৫০-৫০০ টাকা।

লাভ কেমন
ঘরে রাখা গাছের ব্যবসাটা হয় দুইভাবে। প্রথমত, সরাসরি ক্রেতার কাছে গাছ বিক্রি করা। দ্বিতীয়ত, গাছ ভাড়া দেওয়া। নার্সারি বা বিক্রয়কেন্দ্র করে সেখান থেকে সরাসরি ক্রেতার কাছে গাছ বিক্রি করতে পারেন। আজকাল সুপার শপগুলোও ঘরে রাখার গাছ বিক্রি করছে। চাইলে সেখানেও সরবরাহ করতে পারেন।
আর ভাড়া দিতে চাইলে বিভিন্ন অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। আজকাল প্রায় সব অফিসই অন্দর সজ্জার জন্য গাছ ভাড়া নিচ্ছে। তাই এখানেও আয় ভালোই। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নার্সারিগুলো সাড়ে পাঁচ টাকা দৈনিক হিসাবে গাছ ভাড়া দেয়। তবে কম্পানিকে নূ্যনতম ৩০টি গাছ নিতে হয়। কারণ গাছ পেঁৗছে দেওয়া, ফেরত নিয়ে আসা এবং সময় সময় খোঁজ-খবর নেওয়ার দায়িত্বও নার্সারির। দৈনিক রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব ভাড়া নেওয়া কম্পানির। গাছের ক্ষতি হলে, গাছের বিপরীতে চুক্তির নিয়ম অনুযায়ী জরিমানা গুনতে হবে।

রক্ষণাবেক্ষণ
অর্কিড বা ঝুলন্ত গাছ সাধারণত সূর্যের আলো প্রতিফলিত হয় এমন জায়গায় রাখতে হয়। সেই অর্থে বারান্দা হচ্ছে অর্কিড বা ঝুলন্ত গাছ রাখার জন্য ভালো জায়গা। অর্কিড বা ঝুলন্ত গাছে দৈনিক একবার পানি দিতে হবে। এমনভাবে দিতে হয় যেন গাছের গোড়া পুরোপুরি ভিজে, কিন্তু উপচে না পড়ে। ঘরের ফ্লোরে রাখা টবের গাছকে নিয়ম করে সপ্তাহে দুবার রোদে দিতে হয়। সকাল-সন্ধ্যা পানি দিতে হয়। পানি এমনভাবে দিতে হবে যেন উপচে না পড়ে এবং গোড়ার মাটি পুরোপুরি ভিজে।

কিছু টিপস
ঘরে রাখা গাছকে দুই ফুটের বেশি বড় হতে দেওয়া ঠিক নয়। ভাড়া গেলে তা নার্সারিতে ফেরত এনে মাসে বা তিন মাসে একবার ড্রেসিং করে নিতে হবে। গোড়া থেকে পুরনো মাটি সরিয়ে নতুন কম্পোস্ট সার মিশ্রিত মাটি প্রয়োগ করতে হবে।
প্রয়োজনে কীটনাশক প্রয়োগ করতে হবে। একবার ভাড়া দেওয়া গাছ ফেরত এনে ১৫ দিন পরিচর্যার জন্য রেখে দিতে হবে
SHARE

Milan Tomic

Hi. I’m Designer of Blog Magic. I’m CEO/Founder of ThemeXpose. I’m Creative Art Director, Web Designer, UI/UX Designer, Interaction Designer, Industrial Designer, Web Developer, Business Enthusiast, StartUp Enthusiast, Speaker, Writer and Photographer. Inspired to make things looks better.

  • Image
  • Image
  • Image
  • Image
  • Image
    Blogger Comment
    Facebook Comment

0 comments:

Post a Comment