আইড় মাছের কৃত্রিম প্রজননের সম্ভাবনা

সিলেট: বাংলাদেশের নদী-নালা ও খাল-বিলে এক সময় জেলেদের জালে প্রচুর ধরা পড়তো সুস্বাদু আইড় মাছ। কিন্তু সময়ের বিবর্তনে এবং মানুষের খামখেয়ালির কারণে এখন অনেকটাই দুষ্প্রাপ্য এই মাছ।

এ প্রেক্ষাপটে আইড় মাছকে আবারও সহজলভ্য করতে এর কৃত্রিম প্রজনন ঘটানোর চেষ্টা চলছে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে।

ইতিমধ্যেই গবেষণা প্রকল্পটি এক বছর অতিক্রম করেছে। শিগগিরই আইড় মাছের কৃত্রিম প্রজনন ঘটানো সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করছেন প্রকল্পের গবেষকরা। 



গবেষণা প্রকল্পটি সফল হলেই রুই, কাতলা ও তেলাপিয়ার মতো আইড় মাছের পোনাও সংগ্রহ করে খাল, বিলে ও পুকুরে চাষ করা যাবে। আবার ছড়িয়ে পড়বে আমিষ সমৃদ্ধ এই ‘ক্যাট ফিস’। পাশাপাশি এর মাধ্যমে উন্মোচিত হবে বাংলাদেশের মৎস গবেষণায় এক নতুন দিগন্ত।

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের অধীনে শুরু হওয়া এ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে আগামী বছরের জুনে। গবেষণা প্রকল্পের টিম লিডার হিসেবে কাজ করছেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ,বায়োলজি ও জেনেটিক্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাহবুব ইকবাল এবং কো-ইনভেস্টিগেটর হিসেবে রয়েছেন একই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সোহেল মি‍ঞা।

টিম লিডার ড. মোহাম্মদ মাহবুব ইকবাল বাংলানিউজকে জানান, বাংলাদেশের সংকটাপন্ন মাছের মধ্যে অন্যতম হলো আইড় মাছ। এই মাছ এক সময় হাওড়,বাওড়, নদী, খাল ও বিলে প্রচুর পাওয়া গেলেও এখন আর তেমন মিলছে না।

তিনি আরও জানান, প্রাকৃতিক জলাশয়, মুক্ত জলাশয় ও প্লাবন ভূমি ভরাট হয়ে যাওয়ায় প্রজনন ক্ষেত্র ধ্বংস হওয়া এবং পোনা বড় হতে না দিয়ে অতিমাত্রায় আহরণ করাই আইড় মাছের সংকটাপন্ন হওয়ার প্রধান কারণ। এছাড়াও কীটনাশক ও অন্যান্য রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহারও এর বিলুপ্তির জন্য ‍অনেকাংশে দায়ী। 

সিলেটের জকিগঞ্জ থেকে আইড় মাছ এনে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা পুকুরে সফলভাবে প্রাকৃতিক প্রজনন ঘটানো হয়েছে। এছাড়াও মাছের বায়োলজি, ডিম দেওয়ার সময় এবং ডিম দেওয়ার পর মাছের পরিবর্তন ইত্যাদি বিষয়ে পরীক্ষা করা হয়েছে।

ড. মোহাম্মদ মাহবুব ইকবাল জানান, গবেষণায় দেখা যায় বছরে দুই ধাপে (মে-জুন), (সেপ্টেম্বর-অক্টোবর) প্রায় পঁচিশ হাজার থেকে ত্রিশ হাজার ডিম ছাড়ে মাছটি। সাধারণত আইড় মাছের দুই ধরনের প্রজাতি পাওয়া যায়। তবে গবেষণা করতে গিয়ে এই দুই প্রজাতির বাইরেও সিলেট অঞ্চলের আরও একটি নতুন প্রজাতির সন্ধান পাওয়া গেছে।

সফলভাবে প্রাকৃতিক প্রজননের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতায় তৈরি মিনি হ্যাচারিতে কৃত্রিম প্রজননের কাজ চলছে।মাছের পিটুইটারি গ্রন্থির সহায়তায় এক বিশেষ প্রক্রিয়ায় আইড় মাছের কৃত্রিম প্রজনন করা যায় কি না এখন তা নিয়ে গবেষণা করছে দলটি।

টিম লিডার আশা করেন, প্রজেক্টের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই সফলভাবে কৃত্রিম প্রজনন ঘটানো সম্ভব হবে। যা বাংলাদেশের মৎস গবেষণার ক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্তের উন্মোচন করবে।

প্রসঙ্গত, পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেশের ২৬০ প্রজাতির স্বাদু পানির মাছের মধ্যে ১২টি জাত চরম বিপন্ন ও ১৪টি জাত সংকটাপন্ন। এই সংকটাপন্ন মাছের মধ্যে অন্যতম আইড় মাছ। 
সূত্র: বাংলা নিউজ২৪
SHARE

Milan Tomic

Hi. I’m Designer of Blog Magic. I’m CEO/Founder of ThemeXpose. I’m Creative Art Director, Web Designer, UI/UX Designer, Interaction Designer, Industrial Designer, Web Developer, Business Enthusiast, StartUp Enthusiast, Speaker, Writer and Photographer. Inspired to make things looks better.

  • Image
  • Image
  • Image
  • Image
  • Image
    Blogger Comment
    Facebook Comment

1 comments: