মৎস্য ব্যবস্থাপনা

তারেক সরকার:
মৎস্যচাষিদের সারা বছরই নানা কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়। সময় এবং ঋতুভেদে চাষিদের কর্মকাণ্ডেরও ভিন্নতা থাকে। জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে নানা বৈচিত্র্য আমরা লক্ষ করছি। অধিক তাপমাত্রা, প্রয়োজনীয় বৃদ্ধির অভাবে অনেক মাছ চাষি নানা সমস্যায় পড়ছে। তবে এ সময়ে চাষিরা যেসব সমস্যার মোকাবিলা করছে এবং তাদের করণীয় সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো:

পোনা মারা যাওয়া

অত্যন্ত গরম আবহাওয়ায় এবং পরিবহনের ধকলের কারণে পোনা মৃত্যুর হার বেড়ে যায়। পোনা পরিবহনের আগে সঠিকভাবে কন্ডিশনিং ছাড়াও সকাল এবং সন্ধ্যার পর ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় পোনা ছাড়তে হবে। পোনার পুকুরের পানির পিএইচ আদর্শমাত্রায় রাখতে হবে এবং পানিতে অ্যামোনিয়া দূষণ থাকা চলবে না। পোনা ছাড়ার আগে পুকুরে পরিমাণমতো অক্সিগোল্ড (Oxy-Gold) দানাদার বা ট্যাবলেট প্রয়োগ করলে পোনা মৃত্যুর হার কমবে।

পানিতে গ্যাস হলে

সাধারণত অধিক বা অব্যবহৃত খাবার, মাছের বিষ্ঠা প্রভৃতির কারণে এবং মাছের ঘনত্ব বেশি হলে পুকুরের তলদেশ অ্যামোনিয়া বা হাইড্রোজেন সালফাইড গ্যাসের কারণে দূষিত হয়ে পড়ে, মাছের খাদ্য গ্রহণে অনীহা দেখা যায় এবং মাছ মারা যায়। এ অবস্থায় মাছের ঘনত্ব খুব বেশি হলে কিছু মাছ তুলে পুকুরে মাছের ঘনত্ব কমাতে হবে। অ্যামোনিয়াজনিত সমস্যায় উপকারী ব্যাকটেরিয়াসমৃদ্ধ গ্যাসোনেক্স প্লাস 'Gasonex Plus' প্রতি একরে ৩০০ গ্রাম প্রয়োগে চাষি উপকৃত হবে। এসিড সালফেটসমৃদ্ধ মাটিতে (বিশেষত চিংড়ি ঘেরে) হাইড্রোজেন সালফাইড গ্যাস হলে পন্ড ডিটক্স (Pond Dtox) প্রয়োগ ফলপ্রসূ।

অক্সিজেন কমলে

মাছের অধিক ঘনত্ব, মেঘলা আকাশ এবং পরিবেশের তারতম্যের কারণে পুকুরে অক্সিজেন ঘাটতি হলে মাছ ভেসে যায়। এ সময় জরুরি চিকিৎসায় পুকুরে নির্দেশিত মাত্রায় অক্সিগোল্ড (Oxy-Gold) প্রয়োগ করে মাছ চাষি বিপদমুক্ত হতে পারে।

তেলাপিয়ার মড়ক

তেলাপিয়ার মড়ক এখন একটা মোটামুটি সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত। দুই বছর ধরে চাষিরা এ সমস্যা মোকাবিলা করছে। স্ট্রেপটোকক্কাস জাতীয় ব্যাকটেরিয়াজনিত কারণে এ রোগ হতে পারে। তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে এ সমস্যা প্রকট হয়। শতভাগ সফল চিকিৎসা এখনো পরিলক্ষিত হয়নি। একবার থেমে পরে আবারও সংক্রমণ হতে পারে। এ ক্ষেত্রে পুকুরে প্রথম দুই দিনে দুই মাত্রায় পলগার্ড প্লাস (Polgard Plus) প্রতি একরে ৫০০-৬০০ মিলি প্রয়োগ করে এবং এ সময় খাবার বন্ধ রেখে তৃতীয় দিন থেকে খাবারে প্রতি কেজিতে পাঁচ গ্রাম এমক্সিসিলিন (Amoxy Fish) ব্যবহারে সুফল পাওয়া গেছে । খাবারে ওষুধ পাঁচ থেকে সাত দিন চলতে পারে।

শিং-মাগুর চাষিদের জন্য

শিং-মাগুর অত্যন্ত লাভজনক চাষ হিসেবে বিবেচিত হলেও চাষিদের অনভিজ্ঞতার কারণে অনেকেই সমস্যায় পড়ছে। শিং-মাগুর চাষে মানসম্মত খাবার (৩০ শতাংশের বেশি প্রোটিন থাকতে হবে) অন্যতম শর্ত। এ মাছ চাষে খাবার খুব বেশি প্রয়োজন হয় না, তবে অধিক খাবার প্রয়োগে অ্যামোনিয়াজনিত দূষণে শিং মাছ ব্যাপক মারা যায়। এ কারণে প্রতি মাসে একবার গ্যাসোনেস প্লাস (Gasonex Plus) ব্যবহারে বিপদমুক্ত রাখা যায়। পুকুর বেশি পুরনো হলে এবং কাদা ও জৈব বর্জ্য বেশি হলে বিপদের আশঙ্কাও বেশি। এ ক্ষেত্রে চাষিরা বায়োকাল্ট (Biocult) ব্যবহারে সুফল পেতে পারে। এ ধরনের সমস্যায় চাষিরা মৎস্যবিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিতে পারে।

পুকুরের পরিবেশ

মাছের বিচরণভূমি পুকুরের পানি ও তলদেশের পরিবেশ স্বাস্থ্যসম্মত রাখা গেলে চাষিরা রোগ-ব্যাধি থেকে মাছকে সহজে রক্ষা করতে পারে। এ ক্ষেত্রে পানির পিএইচ রক্ষা, দূষিত গ্যাস থেকে মুক্তি, পুকুরে উপকারী অণুজীবের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে পারলে লাভবান হবে। পুকুরে নিয়মিত জিওলাইট ও প্রোবায়োটিক্সের সমন্বয় অ্যাকোয়া ম্যাজিক (Aqua Magic) অথবা প্রোবায়োটিক্স পন্ড প্লাস (Pond Plus) ব্যবহারে নিশ্চিতভাবেই উপকৃত হতে পারে।
বিস্তারিত জানতে:০১৯২৬৯৯০৫০০।
SHARE

Milan Tomic

Hi. I’m Designer of Blog Magic. I’m CEO/Founder of ThemeXpose. I’m Creative Art Director, Web Designer, UI/UX Designer, Interaction Designer, Industrial Designer, Web Developer, Business Enthusiast, StartUp Enthusiast, Speaker, Writer and Photographer. Inspired to make things looks better.

  • Image
  • Image
  • Image
  • Image
  • Image
    Blogger Comment
    Facebook Comment

0 comments:

Post a Comment