রাজধানীর বুকে অবস্থিত ৮৬বর্গ কিলোমিটার আয়তনের শেরে বাংলাকৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (শেকৃবি) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সর্বপ্রাচীনকৃষি শিক্ষার বিদ্যাপীঠ।
দুর্ভীক্ষপীড়িত বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষেরঅন্ন,বস্ত্র,বাসস্থান ব্যবস্থাসহকৃষিশিক্ষা, কৃষি গবেষণা ওকৃষি সম্প্রসারণে অগ্রণী ভূমিকা পালনেরজন্য ১৯৩৮ সালে শেরেবাংলা এ.কে. ফজলুলহকের একক প্রচেষ্টায় ঢাকায়প্রতিষ্ঠিত হয় বেঙ্গল এগ্রিকালচারালইনস্টিটিউট। যেপ্রতিষ্ঠান সকলকে দেখিয়েছে কৃষিতেউচ্চতর শিক্ষা ও গবেষণারপথ, করছে কৃষির উন্নয়ন। এইপথ ধরেই শুরু হয়বাংলাদেশে কৃষিতে উন্নত ওউচ্চতর শিক্ষা।
কৃষি শিক্ষার মাধ্যামে দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্নকরার স্বপ্নদ্রষ্টা প্রতিষ্ঠানটিশিক্ষা,গবেষণা ও সম্প্রসারণ-এই তিন মূলমন্ত্রকে ভিত্তি করে ২০০১সালের ১৫ জুলাই শেরেবাংলাকৃষি বিশ্ববিদ্যালয় নামে রূপান্তরিত হয়। প্রতিষ্ঠানটিবিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হওয়ার পর থেকেকৃষি বিষয়ক গবেষণা কাজআগের চেয়ে দ্বিগুণ হয়েছে। দেশেএখন মানুষ বাড়ছে কিন্তুআবাদী জমি কমছে।তাই এখন অল্প জমিতেকিভাবে রোগমুক্ত ও বেশি ফসলউৎপাদন করা যায় তাসময়ের দাবি হয়ে দাঁড়িয়েছে। যারফলে জাতির কাছে কৃষিবিদদেরচাহিদাও বাড়ছে। আরতাই রোগমুক্ত চারা উৎপাদন এখনসময়ের দাবি হয়ে দাড়িয়েছে। কারণরোগমুক্ত চারা উৎপাদন করতেপারলে উৎপাদন খরচ অর্ধেকেচলে আসবে,আর কৃষকরাহবে অধিক লাভবান।
অন্যদিকেকৃষক অল্প জমিতে অধিকফসল পেতে অপরিমিতভাবে ব্যবহারকরছে বিভিন্ন রকমের ফার্টিলাইজার ওইনসেক্টিসাইড। এতেপ্রকৃতি হয়ে উঠছে বিরূপ। আরএ বৈরী প্রকৃতি ওমানুষের তৈরি নানা সমস্যারকারণে যখন কালের আবর্তেহারিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন রকমেরফুল, ফল ও ধান, গম, ভুট্টাসহ বিভিন্ন রকমের সিরিয়াল ক্রপস। ঠিকতখনই শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থাপনকরা হয়েছে সর্বাধুনিক বায়োটেকনোলজিল্যাবরেটরি, যার মাধ্যমে অল্পসময়ে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে অধিকসংখ্যক রোগমুক্ত চারা উৎপাদন করাযাবে। এছাড়ারোগ প্রতিরোধী বিভিন্ন রকমের ফসলের জাতওনির্ণয় করা যাবে।যুগোপযুগী করে নির্মাণ করাসর্বাধুনিক এ ল্যাবরেটরির দুটিভাগ রয়েছে। একটিহলো প্লান্ট টিস্যু কালচার ভাগ, যেখানে গাছের কোনো সজীবঅংশ নিয়ে অল্প সময়েরোগবিহীন অধিকসংখ্যক চারা উৎপাদন করাহয়। অন্যটিহলো ডিএনএ এঙ্কট্রাকশন(পৃথক) পার্ট, যার মাধ্যমে মাঠথেকে কোনো ফসলের স্যাম্পলসংগ্রহ করে পরবর্তী সময়েডিএনএ এঙ্কট্রাকশন এবং পলিমার চেইনরি- অ্যাকশন (পিসিআর) করে জানা যাবেকোন ফসলের জিনগত বৈশিষ্ট্যকি রকম? পৃথক করাযাবে একই ফসলের বিভিন্নজাতের স্ব-স্ব চরিত্র। প্রতিরোধকরা যাবে নতুন আবিষ্কৃতফসলের নাম নিয়ে বিতর্ক।
অন্যদিকেমুলিকুল্যার অ্যানালাইসিসের মাধ্যমে নির্ণয় করা যাবেরোগ প্রতিরোধী বিভিন্ন ফসলের জাত।বর্তমানে ল্যাবটিতে টিস্যু কালচারের মাধ্যমেজারবেরা, অ্যালোভেরা, কলা, আলু, ক্যালানডিয়া(সৌন্দর্যবর্ধক বৃক্ষ), আদা, আনারস, পানইত্যাদি বিভিন্ন জাতের শস্যের রোগমুক্তচারা উৎপাদনের নিরন্তর গবেষণা চলছে।এছাড়াও ডিএনএ এঙ্কট্রাকশন পদ্ধতিতেমুলিকুল্যার অ্যানালাইসিসের মাধ্যমে বেগুনের জেনেটিক ডাইভারসিটি ও আলুর লেটব্লাইট তথা মড়ক রোগেরপ্রতিরোধী জাত উদ্ভাবনের কাজওচলছে।
শেকৃবিরআধুনিক এ বায়োটেক ল্যাবেরপ্রতিষ্ঠাতা ও বায়োটেকনোলজি বিভাগেরপ্রফেসর ড. মোঃ ইকরামুলহক বলেন, এ ধরনেরল্যাবরেটরি বিলুপ্তপ্রায় এবং বিলুপ্তির পথেসম্ভাবনাময় শস্যের অধিকসংখ্যক নিরোগচারা উৎপাদন করতে ওপ্রতিকূল পরিবেশে টিকে থাকতে বিভিন্নশস্যের নতুন নতুন জাততৈরি করতে বিশেষ ভূমিকারাখবে, যা এ দেশেরকৃষিকে আরও সমৃদ্ধ করবে।
সর্বাধুনিকএ ল্যাব সম্পর্কে শেকৃবিরভিসি প্রফেসর মোঃ শাদাত উল্লাবলেন, এ ধরনের আধুনিকগবেষণাগার গবেষণার গতিকে আরও ত্বরান্বিতকরবে এবং ফুল, ফল, শস্যের অভাব রোধ করেদেশকে ফুল-ফল ওশস্যে ভরে তুলবে। সূত্র: ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম
0 comments:
Post a Comment