স্বল্প পুঁজিতে গড়ে উঠতে পারে লাভজনক মুরগির খামার

কম সময়, কম পরিশ্রম আর স্বল্প পুঁজিতে মুরগির খামার করা যায়। ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা নিয়েই শুরু করা যায় এ ব্যবসা। মাত্র দেড় থেকে তিন মাসের মধ্যে উঠে আসে আয়। মুরগির মাংস ও ডিমের পাশাপাশি মুরগির বিষ্ঠা জৈব সার হিসেবে বিক্রি করা যায়। আর পরিবারের লোকজনের মাধ্যমেই পরিচালনা করা যায় মুরগির খামার।

নব্য ও সীমিত সাক্ষরদের জন্য জীবিকা দক্ষতা বৃদ্ধিমূলক শিক্ষা উপকরণ ‘মুরগি পালন’-এ এসব তথ্য উঠে এসেছে। কমনওয়েলথ অব লার্নিংয়ের সহায়তায় ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের ‘সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল এডুকেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট’ এ শিক্ষা উপকরণ প্রকাশ করেছে। একইসঙ্গে এ বুকলেটের তথ্য নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে অ্যানিমেশন ভিডিও। এতে মুরগির খামার তৈরির প্রক্রিয়া ও বাজারজাতকরণের কৌশল তুলে ধরা হয়েছে। বুকলেটটি সহজ ভাষায় লেখা। যে কেউ বইটি পড়ে এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানতে পারবেন। ‘কাজ করি জীবন গড়ি’ শিরোনামের এ প্রকাশনায় মুরগি খামারের গুরুত্ব সম্পর্কে উল্লেখ করা হয়। মুরগির মাংস আমাদের আমিষ জাতীয় খাদ্যের চাহিদা পূরণ করে। মুরগির বিষ্ঠা ও হাঁড়ের গুঁড়া জমিতে সার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এর পাখনা দিয়ে ধুলাবালি ঝাড়ার ঝাড়ন তৈরি হয়। মুরগির নাড়িভুঁড়ি মাছের অতি পছন্দনীয় খাবার। লাভজনক বলে এখন গ্রাম ও শহরের অনেকেই মুরগির খামার করছেন। উদ্যোক্তা যে কেউ মুরগির খামারের ব্যবসায় নেমে পড়তে পারেন বলে বুকলেটে উল্লেখ করা হয়। বলা হয়, ১০০ থেকে ১৫০টি মুরগি পালনের জন্য বাড়ির আশপাশে মাত্র ২০ ফুট লম্বা এবং ১০ ফুট চওড়া জায়গা হলেই যথেষ্ট। মুরগির খামারের জন্য স্থায়ী উপকরণ হিসেবে ঘর তৈরি, পানির ছোট পাত্র, কোদাল, লোহা বা তারের জাল, পলিথিন ইত্যাদি কিনতে প্রায় ১৮ হাজার টাকার প্রয়োজন। চলতি উপকরণ ঝুড়ি, ধানের তুষ, কাঠের গুঁড়া, বৈদ্যুতিক বাল্ব, বৈদ্যুতিক তার, রশি ইত্যাদি কিনতে লাগবে প্রায় ১ হাজার টাকা।

বুকলেটে উল্লেখ রয়েছে- মুরগির খামারের জন্য ২০ ফুট লম্বা, ১০ ফুট চওড়া একটি ঘর তৈরি করতে হবে। ঘরের মেঝে বা পাটাতন মাটি থেকে দেড় থেকে দুই ফুট উঁচু এবং সমান হতে হবে। বাঁশ, কাঠের তক্তা, মাটি বা ইটের দেয়াল দিয়ে ঘর তৈরি করা যায়। তবে বাঁশের চাটাই দিয়ে ঘর তৈরি করাই ভালো। কারণ এতে কম খরচ হয়। ঘরটি হতে হবে ৭ থেকে ৮ ফুট উঁচু। ঘর তৈরি শেষে দেড় থেকে তিন ফুট উঁচু মোটা তারের নেট দিয়ে ঘরটি ঘিরে দিতে হবে। ২০০ বর্গফুট জায়গায় ১৫০ থেকে ১৭০টি ব্রয়লার এবং ১২০ থেকে ১২৫টি লেয়ার মুরগি পালন করা যায়। বুকলেটে উল্লেখ করা হয়, মুরগির খামারে ব্রয়লার ও লেয়ার মুরগি রাখা হয়। মাংসের জন্য ব্রয়লার এবং ডিমের জন্য লেয়ার মুরগি পালন করা হয়। ভালো জাতের মুরগি ছাড়া ব্যবসায় লাভ করা যায় না।

মাংসের জন্য ব্রয়লার মুরগির একদিন বয়সী বাচ্চা কিনতে হবে। ডিমের জন্য লেয়ার মুরগির একদিন বয়সী বাচ্চা কিনতে হবে। ভালো কোম্পানির কাছ থেকে বাচ্চা কিনতে হবে। কেনার আগে জেনে নিতে হবে বাচ্চার টিকা দেয়া আছে কিনা। একটি মুরগি প্রতিদিন গড়ে ১০০ গ্রাম খাবার খায়। খাবারের মধ্যে থাকে গম, ভুট্টা, চালের কনা, চালের কুড়া, গমের ভুসি, তিলের খৈল, শুঁটকি মাছের গুঁড়া, ঝিনুক ও শামুকের গুঁড়া।

মুরগি পালনের ক্ষেত্রে রোগবালাইয়ের প্রতি বিশেষ নজর রাখতে হয়। রানীক্ষেত, বসন্ত, রক্ত আমাশয়, কলেরা, বার্ড-ফ্লু মুরগির প্রধান রোগ। এসব রোগে আক্রান্ত হলে মুরগি মারা যায়। এজন্য খুব সতর্ক থাকতে হয়। শীতের সময় মুরগি ও বাচ্চাকে ঠা-া থেকে রক্ষা করতে হবে। গরমের সময় মুরগির ঘরে বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা করতে হবে। মুরগিকে পচা ও বাসি খাবার খাওয়ানো যাবে না। পানির পাত্রে সব সময় পরিষ্কার পানি দিতে হবে। রোগে আক্রান্ত মুরগিকে টিকা দেয়া যাবে না। মুরগি মারা গেলে মাটিতে পুঁতে ফেলতে হবে। মুরগির ঘরে বাইরের জুতা পরে ঢোকা যাবে না।

খামারে মুরগি পালনের পাশাপাশি এগুলো বাজারে বিক্রির ব্যবস্থা করতে হবে। জেলা বা উপজেলা শহর, ছোট-বড় বাজার, গ্রাম, পাড়া-মহল্লায় মুরগির প্রচুর পরিমাণে চাহিদা রয়েছে। এসব স্থানে মুরগি ঝুড়িতে ভরে সরবরাহ করা যায়। ১০০টি ব্রয়লার মুরগি পালন করে দুই মাসে প্রায় ১০ হাজার টাকা লাভ করা সম্ভব। পুঁজি লাগবে প্রায় ২২ হাজার টাকা। অন্যদিকে লেয়ার মুরগি ২০ সপ্তাহ বা পাঁচ মাস বয়স থেকে ডিম পাড়া শুরু করে। এ মুরগি টানা এক বছর বা তারও বেশি সময় ধরে ডিম দেয়। খরচ বাদে লেয়ার মুরগি পালনে দুই বছরে লাভ প্রায় পৌনে দুই লাখ টাকা। শুরু করতে পুঁজি লাগবে ১ লাখ টাকার কিছু বেশি। মুরগি পালন বিষয়ক এ বুকলেটটি সংগ্রহের জন্য যোগাযোগের ঠিকানা : ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন, বাড়ি-১৯, রোড-১২, ধানমন্ডি আবাসিক এলাকা, ঢাকা-১২০৯। টেলিফোন-৮১১৫৯০৯, ৮১১৯৫২১-২২, ৯১২৩৪০২, ৯১২৩৪২০
SHARE

Milan Tomic

Hi. I’m Designer of Blog Magic. I’m CEO/Founder of ThemeXpose. I’m Creative Art Director, Web Designer, UI/UX Designer, Interaction Designer, Industrial Designer, Web Developer, Business Enthusiast, StartUp Enthusiast, Speaker, Writer and Photographer. Inspired to make things looks better.

  • Image
  • Image
  • Image
  • Image
  • Image
    Blogger Comment
    Facebook Comment

0 comments:

Post a Comment